মঙ্গলবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৫৪ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
নান্দাইলে বিএনপি নেতার উপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ ভাঙ্গায়  মোটরসাইকেল যোগে নিজ বাড়িতে যাওয়ার পথে প্রাণ গেল স্ত্রীরঃ স্বামী আহত  ভাঙ্গায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্রজনতার সাথে উপজেলা প্রশাসনের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত  ছাত্র-আন্দোলনে নিহত আমিরের লাশ ১০৭ দিন পর উত্তোলন  কুষ্টিয়ায় ট্রেন আটকে রেখে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ তারেক জিয়ার নির্দেশে ফরিদপুরের সেই বিধবার পাশে বিএনপি নেতারা”রিজভী ময়মনসিংহে ফিলিং স্টেশনে আগুন: নিহত ১, দগ্ধ ৬ দুই ধাপে বিশ্ব ইজতেমা, তারিখ জানালেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা উত্তরায় অতিরিক্ত সচিবের বাসায় মিললো কোটি টাকা, ১১টি আইফোন আসিয়ানের সদস্যপদ পেতে ইন্দোনেশিয়ার সমর্থন চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা
নোটিশঃ
২৪ ঘন্টায় লাইভ খবর পেতে চোখ রাখুন প্রতিদিনের বাংলাদেশ ওয়েবসাইটে

কিশোরগঞ্জের নিকলীতে এক বাক প্রতিবন্ধী গৃহবধূ কে অবরুদ্ধ রাখার অভিযোগ

Reporter Name / ১৭৫ Time View
Update : রবিবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০২২, ১২:৫৬ অপরাহ্ন

আব্দুর রউফ ভূঁইয়া: বিশেষ প্রতিনিধি
কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলার জারইতলা ইউনিয়নের রোদারপুড্ডা গ্রামের বাক-প্রতিবন্ধী এক গৃহবধূ মোছা. বেগম (২২) কে বসত ঘরে তালা মেরে রেখে সারাদিনের জন্য গ্রামের পাশের রোদারপুড্ডা বাজারে দোকানদারি করার  অভিযোগ উঠেছে তার স্বামী আলী হোসেনের বিরুদ্ধে।  মোছাঃ বেগম আলী হোসেনের দ্বিতীয় স্ত্রী। আলী হোসেনের প্রথম স্ত্রীর তিন সন্তান আর বেগমের তিন বছরের এক মেয়েসহ সকলকেই বেগমই লালন পালন করে তালাবদ্ধ একটি ঘরে। গত চার মাস ধরেই গ্রামবাসীর নাকের ডগায় এ ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাটি ঘটে চলে আসছে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।
বেগমের পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ বিয়ের চার বছর পর থেকে বেগমের উপর এই নির্যাতন চালাচ্ছে স্বামী আলী হোসেন।
এই বিষয়ের সত্যতা যাচাই করা জন্য  সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় আলী হোসেনের স্ত্রীকে রেখে যাওয়া ঘরে তালাবদ্ধ।বসত ঘরের দুটি দরজায় দুটি তালা লাগানো আছে। বাহির থেকে কড়া নেড়ে ডাক দিলে ভেতর থেকে একটা বাচ্চাকে বলতে শোনা যায়, “কেডা তুমি,
তালাবদ্ধ ঘরে লোকজন আছে জেনে নিশ্চিত হয়ে পাশের ঘরের পরিবারের গৃহকর্তার নিকটে তালাবদ্ধ করে রাখার বিষয়ে জানতে চাইলে অবসরপ্রাপ্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক পরিচয় দিয়ে নূর ইসলাম মাষ্টার বলেন
 আলীর স্ত্রী বোবা এবং পর্দানশীল। এই জন্য তাকে তালা মেরে রাখা হয়। অবসরপ্রাপ্ত ঐ শিক্ষকের  স্ত্রী জানান যে মাঝে মাঝে বোবা মেয়েটি তাদের ঘরে আসে যখন তার স্বামী আলী বাড়িতে থাকে। মাষ্টারের নাতনী নবম শ্রেণীর ছাত্রী বুশরা বলে, এভাবে কাউকে ঘরে তালাবদ্ধ করে রাখা ঠিক না। প্রশ্নের উত্তরে নূর ইসলাম মাষ্টারও একপর্যায়ে স্বীকার করেন, এটি মানবাধিকার লঙ্ঘনের সামিল।
আলীর দোকানের পাশেই একটি চায়ের দোকানে বসে গন্যমান্য কিছুর ব্যক্তির নিকটে আলীর পরিবারের তালাবদ্ধ রাখার বিষয়ে জানতে চাইলে সালিসান মো. শাহেদ মিয়া বলেন, বহুবার দরবার সালিস হয়েছে আলীর এই সব কর্মকান্ডের বিষয়ে কিন্তু আলী কারো কথা শুনেনি। এছাড়াও আঃ আউয়াল, পশুচিকিৎসক সাদিরসহ অনেকেই আলীর এই তালাবদ্ধ রাখার বিষয়টি বেগমের স্বাধীনতার উপর হস্তক্ষেপ বলে মনে করেন।
বেগমের মা কান্না করে বলেন, আমার মেয়েটা বোবা বলে আমার মেয়েটিকে দিনরাত পরিশ্রম করায়, দোকানের যাবতীয় বিরানি   সে একাই রান্না করে দেয় আর একটু হেরফের হলেই মারধর করে, কিছুদিন আগে মেয়েটির সাথে দেখা করতে গেলে আমাকে এবং আমার ছেলের বউকে আলী মারধর করে আর আমার ছেলের বউ দিপার বাম কান ছিঁড়ে স্বর্নের দুল নিয়ে যায়। আমি বিচার চেয়ে ব্যর্থ হয়েছি।
বেগমের বাবা সোলাইমানও আক্ষেপে বলেন, মেয়েটি বোবা বলে আলীর প্রথম স্ত্রীর তিন সন্তান রেখে মারা যাওয়ার পরে আমি অনেক কিছু দিয়ে আমার মেয়েকে আলীর কাছে বিয়ে দিয়েছিলাম আর মেয়েটির নামে ১৮ শতাংশ জমিও লিখে দিয়েছি কিন্তু বর্তমানে এই জমি বিক্রি করে না দিলে আলী আমার মেয়েকে পরিবারের করো সাথে দেখা করতে দিবে না বলে জানায়। আমি এলাকার অনেক গন্যমান্য ব্যক্তি, মেম্বার, চেয়ারম্যানসহ সবার কাছে আলীর বিরুদ্ধে বিচার চেয়ে ব্যর্থ হয়েছি।
জারইতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজমল হোসেন আফরোজ বলেন, একাধিকবার আমি আলীর এই ঘটনা মিটিয়ে দিয়েছি। সে মেয়েটিকে কাজ করানোর জন্যই মূলত তালা বদ্ধ করে রাখে, আর ভবিষ্যতে অনাচার করবে না কথা দিয়েও কথা রাখে না। ঘরে তালাবদ্ধ করে রাখার বিষয়টিকে চরম মানবাধিকারের লঙ্ঘন বলেও মনে করেন তিনি।
আলী তার স্ত্রীকে কেন ঘরে তালাবদ্ধ করে রাখেন এই বিষয়ে জানতে চাইলে অনেকখানি ক্ষুব্ধ হয়ে এ প্রতিবেদককে বলেন, চলেন আমার সাথে ঘরে গিয়ে দেখি তালা লাগানো আছে কি-না! প্রমান আছে এ কথা বলিতেই তিনি চুপসে যান।
এক পর্যায়ে বলেন, আমি আমার বউকে পর্দায় রাখি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
Developer Ruhul Amin