মোঃ জিয়াউর রহমান কুষ্টিয়া প্রতিনিধিঃ
পদ্মায় বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর শীতকালীন ফসল উৎপাদনের আগে মধ্যবর্তী সময়ে মাসকলাই চাষ করে থাকেন চাষীরা। নদী বিধৌত পদ্মার চরে মাসকলাই চাষ করে এবছরও ব্যাপক সাফল্য পেয়েছেন কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের চাষীরা। ফলন ভাল হওয়ায় কাটা মাড়াই শেষে ডাল জাতীয় এ ফসল ঘরেও তুলেছেন তারা। কম খরচ ও অল্প পরিশ্রমে অর্থকরী এ ফসল চাষ করে আর্থিক স্বচ্ছলতাও ফিরেছে দরিদ্র চরবাসীর। কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে চলতি মৌসুমে ৩ হাজার ২২০ হেক্টর জমিতে মাসকলাই চাষ হয়েছিল। এরমধ্যে নদীবেষ্টিত পদ্মার চরাঞ্চলে চাষ হয়েছে ২ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে। মাসকলাই চাষে চাষীদের বিঘা প্রতি খরচ হয়েছে গড়ে মাত্র ৪ হাজার টাকা। আর ফলন হয়েছে বিঘাপ্রতি ৩ মন থেকে ৪ মন পর্যন্ত। উৎপাদন খরচ বিহীন ও বিনা পরিশ্রমে মাত্র দুই মাসের ব্যবধানে খরচ বাদ দিয়ে ৪ হাজার টাকা মন দরে বিক্রয় করে চাষীদের লাভ হচ্ছে ৮ হাজার থেকে ১২ হাজার টাকা পর্যন্ত। উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের চল্লিশপাড়া গ্রামের চাষী সোহেল আহমেদ জানান, এ বছর তিনি ৩ বিঘা জমিতে মাসকলাই চাষ করেছিলেন। খরচ হয়েছে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা। ৪ মন হারে ফলন হয়েছে তার। খরচ বাদ দিয়ে বেশ ভাল লাভ হয়েছে। তবে তিনি বেশী দামের আশায় প্রায় অর্ধেক কলাই সংরক্ষণও করেছেন বলে জানিয়েছেন। কৃষকের ক্ষেত থেকে পরিপক্ক মাসকলাই গরু বা মহিষের গাড়িতে করে কৃষকের খোলায় পৌঁছে দিয়েও আয় বাড়তি করছেন কৃষকরা। আবার মেশিনে মাসকলাই মাড়াই করেও আয় করছেন কৃষিযন্ত্র ব্যবহারকারীরা। তারা প্রতিমন মাসকলাই মাড়াই করে আড়াই কেজি হারে সংগ্রহ করে তারাও অধিক মুনাফা অর্জন করেছেন বলে জুয়েল হোসেন নামের এক আবার চাষীদের কাছ থেকে মাসকলাই ক্রয় করে খুচরা বাজারে ৪ হাজার টাকা মন দরে বিক্রয় করে চাষীদের পাশাপাশি খুচরা ব্যবসায়ীরাও লাভবান হয়েছেন বা হচ্ছেন এমন কথা জানিয়েছেন বোরহান আলী নামে এক খুচরা ব্যবসায়ী। কৃষি বিভাগের পরামর্শের পাশাপাশি বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে আধুনিক ও উচ্চফলনশীল জাতের মাসকলাই বীজ সরবরাহ, আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার ও প্রয়োজনীয় প্রণোদনা দেওয়ায় এবছরও মাসকলাইয়ের ভাল ফলন হয়েছে বলে জানিয়েছেন দৌলতপুর কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. নুরুল ইসলাম। অন্যদিকে, অনাবাদী পদ্মার চরে অর্থকরী ফসল মাসকলাই-সহ সব ধরণের ফসল চাষে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ও প্রণোদনা পেলে কৃষকদের ফসল উৎপাদনে আগ্রহ বাড়বে বলে জানিয়েছে চরবাসী ।