ফরিদপুর প্রতিনিধি
ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার জাহাপুর ইউনিয়নের ০৫ ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মো. ইলিয়াস মোল্লা কর্তৃক জাফরাকান্দি গ্রামের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের তিন পরিবারকে বসত ভিটা থেকে উচ্ছেদের হুমকী প্রতিনিয়ত দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আপনা আপনি বসত ভিটা সরিয়ে না নিয়ে গেলে বল প্রয়োগ করে সরিয়ে দেয়া হবে বলে হুমকী প্রদারে অভিযোগ তুলে প্রতিবাদে সাংবাদিক সম্মেলন করেছে হুমকীপ্রাপ্ত পরিবারগুলোর সদস্যরা। তারা হুমকি দাতার কবল থেকে পরিবারের সদস্যদের রক্ষায় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে।
বুধবার জাফরাকান্দি গ্রামের উচ্ছেদ হুমকীর প্রাপ্তদের নিজ বাড়ীর উঠানে সাংবাদিক সম্মেলনে তারা দাবী করেন, খেলার মাঠ সম্প্রসারণের ধুয়া তুলে ওই ইউপি সদস্য অবিলম্বে বাড়ীঘর ছেড়ে দিতে বলেছে, অন্যথায় বলপুর্বক উচ্ছেদ করা হবে বলে হুমকী দেয়া হচ্ছে।
সাংবাদিক সম্মেলনে হুমকি প্রাপ্ত রতন কুমার মন্ডল, মানিক কুমার মন্ডল ও পরিতোষ বিশ্বাসসহ পরিবারের সদস্যরা এবং স্থানীয়রা বক্তব্য রাখেন।
তারা বলেন, প্রভাবশালী ইউপি সদস্য মো. ইলিয়াস মোল্লা কর্তৃক হুমকির কারণে ওই সকল পরিবারের নারী ও শিশুসহ সদস্যরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তারা যে কোনো সময় হামলার ঘটনা ঘটতে পারে বলে সংশয় প্রকাশ করছেন। পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তার দাবীতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন তারা।
রতন কুমার মন্ডল, মানিক কুমার মন্ডল ও পরিতোষ বিশ্বাস দাবী করেন, জাফরাকান্দি মৌজার ৫৩৮ নং দাগে ৩৯ শতাংশ জমি ক্রয়ের মৌখিক চুক্তিতে ২০১৬ সাল থেকে বসবাস করে আসছেন তারা (পরিবারগুলো)। এরই মধ্যে সর্বমোট ১০ লাখ টাকায় রফা হওয়া জমির মুল্যের পাঁচ লাখ ৮০ হাজার টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। সম্প্রতি বাকি চার লাখ ২০ হাজার টাকা জোগাড় করে জমি দলিল করে দেয়ার কথা বললে জমির মালিক সুকুমার মজুমদার ও সুভাষ মজুমদার অস্বীকৃতি জানায়।
পরিবারগুলোর নারী সদস্য আরতী মন্ডল ও শিপ্রা মন্ডল জনান, শিশুদের নিয়ে চরম উৎকন্ঠার মধ্যে রয়েছেন তারা, যে কোনো সময় হামলার শংকায় রয়েছেন উল্লেখ করে প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা তাদের।
জমি বিক্রি প্রসঙ্গে সুকুমার মজুমদারের স্ত্রী দুর্গা রানী ও সুভাষ মজুমদার জানান, সুকুমার মজুমদারেয় অংশ বিক্রির কথা হয়েছে কিন্তু সুভাষ মজুমদারের অংশ বিক্রির কোনো কথা হয়নি। তারা ওই জমির জন্যে টাকা নেয়া হয়েছে স্বিকার করলেও কতো টাকা নেয়া হয়েছে তা স্পষ্ট বলতে পারেননি।
আর উচ্ছেদের হুমকী দেয়ার অভিযোগ ওঠা ইউপি সদস্য মো. ইলিয়াস মোল্লা তার বিরুদ্ধে ওঠা সকল অভিযোগ অস্বিকার করে বলেন, আমরা সুভাষ মজুমদারের অংশ কিনে নিয়ে খেলার মাঠ সম্প্রসারণ করার কথা বলেছি, কাউকে উচ্ছেদের কথা বলিনি। তার বিরুদ্ধে ওঠা সকল অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন দাবী করেন ওই ইউপি সদস্য।
এদিকে জাহাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. সামছুল ইসলাম জানান, বিষয়টি থানা পুলিশ পর্যন্ত গড়িয়েছে। সেখানে অনেকের সামনে পাঁচ লাখ ৮০ হাজার টাকা নেয়ার কথা সুকুমার মজুমদার ও তার ভাই সুভাষ মজুমদার স্বিকার করলেও জমি বিক্রির ব্যপারে ভিন্ন মত পোষন করেছে। তারা জানান, ওই তিন পরিবার পুরো জমির উপরে বসত ভিটা স্থাপন করে পাঁচ বছরাধিকাল সময় ধরে বসবাস করে আসছে, এবং মালিক পক্ষই বসবাসের সু ব্যবস্থা করে দিয়েছে, পুরো জমি বিক্রির চিন্তা না থাকলে এমন সুযোগ করে দেবার কথা নয়। তিনি জানান, জমির মূল্য আগের তুলনায় বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং কোনো সুবিধাবাদী মহলের ইন্ধনে এমনটি হয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা করেন তিনি। ইউপি সদস্য কর্তৃক হুমকী ধামকি প্রসঙ্গে, তিনি বলেন, কেউ এখন পর্যন্ত আমার কাছে এধরনের কোনো অভিযোগ করেনি, অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখবো।