রবিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৩:৩০ অপরাহ্ন
নোটিশঃ
২৪ ঘন্টায় লাইভ খবর পেতে চোখ রাখুন প্রতিদিনের বাংলাদেশ ওয়েবসাইটে

২২ মার্চ থেকে ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত ঘোষণা হচ্ছে ত্রিশাল উপজেলা

Reporter Name / ৮৭ Time View
Update : মঙ্গলবার, ২১ মার্চ, ২০২৩, ৪:৫০ অপরাহ্ন

অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা সরকার, ময়মনসিংহ থেকেঃ
ভূমিহীন ও গৃহহীণ পরিবারের জীবনমান বদলে দিতে মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার দুই শতক জমির ওপর স্বপ্নের পাকা ঘর দুটি থাকার রুম, বারান্দা, স্যানিটেশন, রান্নাঘর উপহার হিসেবে পাচ্ছে ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার ৩৩টি পরিবার। এমন স্বপ্নের ঠিকানা পেয়ে আশ্রিত পরিবারের জীবনমান বদলে আসছে সুখের ছোঁয়া। একই সাথে আগামী ২২ মার্চ এ উপজেলাকে ‘ক’ শ্রেণিভূক্ত ভূমিহীন ও গৃহহীণমুক্ত ঘোষণা করার সকল প্রস্তুতি শেষে করেছে স্থানীয় প্রশাসন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার ৪টি ইউনিয়নে ভূমিহীন ও গৃহহীন প্রতি পরিবারকে ২ শতক জমিসহ একক গৃহ, সুপেয় পানি ও বিদ্যুৎ সুবিধা প্রদান করে ৩৩টি পরিবারের মাঝে সমাজভিত্তিক আশ্রয়ণ গড়ে তোলা হয়েছে। এসব আবাসনে ভূমিহীনরা পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাসের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আনুষ্ঠানিকতার অপেক্ষায় আশ্রিতরা। ওইদিন দুই শতক ভূমির দলিল ও ঘরের চাবী তুলে দেওয়া হবে সুবিধাভোগিদের মাঝে।
উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, মুজিববর্ষ উপলক্ষে নির্মিত ৪র্থ পর্যায়ের প্রথম ধাপের ঘরগুলো আগামী ২২ মার্চ আনুষ্ঠানিক ভাবে উপকারভোগীদের মাঝে হস্তান্তর করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। হস্তান্তরের এ কার্যক্রমগুলো ওইদিন সকাল ১০ টায় সম্পন্ন হবে। সারাদেশের ন্যায় ত্রিশাল উপজেলাতেও এই পর্যায়ে ৩৩ টি ঘর উপকার ভোগীদের মাঝে হস্তান্তরিত হবে। ত্রিশাল উপজেলার যে সকল ইউনিয়নে সুবিধাভোগিরা ঘর পাচ্ছেন, উপজেলার সাখুয়া ইউনিয়নে ৪টি, বালিপাড়া ইউনিয়নে ৬টি, ধানীখলা ইউনিয়নে ১০টি ও মঠবাড়ী ইউনিয়নে নির্মিত ১৩ টি ঘর হস্তান্তর করা হবে। গত রোববার (১৯ মার্চ) ৩৩ সুবিধাভোগীর নামে জেলা প্রশাসকের পক্ষে সহকারী কমিশনার (ভূমি), ত্রিশাল হাসান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ স্থানীয় সাব-রেজিস্ট্রী অফিসে প্রতি পরিবারকে দুই শতক করে জমির কবুলিয়াত সম্পাদন করে দেন। এছাড়াও সোমবার (২০ মার্চ) ওই ৩৩ জনের নামে কবুলিয়াতের দুই শতক জমির জমা-খারিজও সম্পন্ন হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) হাসান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ।
ধানীখোলার আশ্রয়ন প্রকল্পের সুবিধাভোগী বৃদ্ধ মো. হযরত আলী জানান, দীর্ঘ সময় অন্যের জমিতে খুপড়িঘরে বসতি ছিল ও দিনমুজুরের কাজ করে সংসার চালাতে হতো। প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরে পাওয়ায় এখন আর অন্যের জায়গায় থাকতে হবে না। আবার কথাও শুনতে হবে না কারো। প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া জমি ও ঘরটি এখন নিজের ঘর। সন্তানদের নিয়ে জীবনের বাকী সময়টুকু ভাল ভাবে কাটাতে পারবো। তিনি প্রধানমন্ত্রীর দীর্ঘায়ু কামনা করেন।
মঠবাড়ী ইউনিয়নের খাঘাটিপাড়ার আশ্রয়ন প্রকল্পের মোসাঃ জোসনা বেগম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে জমি ও ঘর দিয়েছেন। আমি এখন সন্তান স্বামী নিয়ে সুখে থাকতে পারবো।
বালিপাড়া ইউনিয়েনের কাজীগ্রামের আশ্রয়ন প্রকল্পের ফিরোজা বেগম জানান, মানুষের বাড়ীতে কাজ করে দিন চালাতে হয়, সহায় সম্বল, জমি ঘর কোনটা না থাকায় আরেকজনের জমিতে ঘর করে থাকতে হতো। সরকার আমাকে ঘর ও দুই শতক জমি দিয়েছে। এখন মাথা গোজার ঠাই হয়েছে। এখন আর অন্যের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে না। নিজের জমিতে নিজের ঘরে থাকতে পারবো। তিনি প্রধানমন্ত্রীর সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ আক্তারুজ্জামান জানান, প্রধানমন্ত্রীর উপহারের এ ঘর নির্মাণ প্রকল্প চলমান কর্মসূচি। গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবারের জন্য সমাজভিত্তিক আশ্রয়ণ প্রকল্প এলাকার সড়ক পাকাকরণসহ পরিবেশ ও প্রতিবেশের উন্নয়নে নানা কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। ত্রিশাল উপজেলায় এ পর্যায়ে গৃহহীন ও ভূমিহীন ৩৩ পরিবারের নির্মাণ করা হয়েছে ঘর ও বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে জমি।
ঘরগুলো অত্যন্ত সতর্কতার সাথে শতভাগ ডিজাইন, স্পেসিফিকেশন ফলো করে নির্মাণ করা হয়েছে। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি), প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এবং সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের তহশীলদারগণের সার্বক্ষণিক তদারকিতে গৃহ নির্মাণ কাজগুলো সম্পন্ন করা হয়েছে। একসাথে ৩৩টি ঘর আনুষ্ঠানিক হস্তান্তরের মধ্যে দিয়ে ত্রিশাল উপজেলা ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত হবে বলেও জানান ইউএনও মোঃ আক্তারুজ্জামান।
ওদিকে সোমবার বিকেলে উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে ত্রিশাল উপজেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীণ মুক্ত ঘোষণা করার লক্ষে প্রেস ব্রিফিং করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ আক্তারুজ্জামান। এসময় উপজেলা প্রকৌশলী মো. মনিরুজ্জামান, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শহীদ উল্লাহ প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
Developer Ruhul Amin