মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ১১:২১ অপরাহ্ন
নোটিশঃ
২৪ ঘন্টায় লাইভ খবর পেতে চোখ রাখুন প্রতিদিনের বাংলাদেশ ওয়েবসাইটে

ইসরায়েলে সরাসরি হামলার নির্দেশ খামেনির

Reporter Name / ১১৮ Time View
Update : বৃহস্পতিবার, ১ আগস্ট, ২০২৪, ৫:১৩ পূর্বাহ্ন

অনলাইন  ডেস্ক: ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের রাজনৈতিক প্রধান ইসমাইল হানিয়া গুপ্তহত্যার শিকার হয়ে নিহত হয়েছেন। ইরানের রাজধানী তেহরানে আবাসস্থলে হওয়া হামলায় হানিয়ার এক দেহরক্ষীও নিহত হয়েছেন।এই ঘটনায় প্রতিশোধ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আলী খামেনি। এমনকি হানিয়া হত্যার জবাবে তিনি সরাসরি ইসরায়েলে হামলা চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছে প্রভাবশালী মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস।

ইরানি কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে স্থানীয় সময় বুধবার (৩১ জুলাই) এই তথ্য জানায় মার্কিন এই সংবাদমাধ্যমটি। এছাড়া এনওয়াইটি’র এই প্রতিবেদন গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করেছে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েলও। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আলী খামেনি হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়াকে হত্যার জবাব হিসেবে ইসরায়েলের ওপর সরাসরি হামলা চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন বলে নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে। তিনজন অজ্ঞাতনামা ইরানি কর্মকর্তার বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যমটি এই তথ্য সামনে এনেছে।

ওই তিন কর্মকর্তার মধ্যে দুইজন রেভোলিউশনারি গার্ড সদস্য। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, হানিয়া হত্যাকাণ্ডের পর ইরানের সুপ্রিম ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের জরুরি বৈঠকে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়। নিউইয়র্ক টাইমস বলছে, হামাস প্রধান হানিয়া নিহত হয়েছেন বলে ইরান ঘোষণা দেওয়ার পরপরই খামেনি বুধবার সকালে ইরানের সুপ্রিম ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের জরুরি বৈঠকে এই আদেশ দেন বলে জানিয়েছেন রেভল্যুশনারি গার্ডের দুই সদস্যসহ তিনজন ইরানি কর্মকর্তা। তারা তাদের নাম প্রকাশ করতে চাননি, কারণ এই বিষয়ে প্রকাশ্যে কথা বলার জন্য তারা অনুমোদিত কেউ নন।

ইরান ও হামাস এই হত্যাকাণ্ডের জন্য ইসরায়েলকে অভিযুক্ত করেছে। টানা প্রায় ১০ মাস ধরে গাজা উপত্যকায় হামাসের সাথে যুদ্ধ করছে ইসরায়েল। ইহুদিবাদী এই দেশটি অবশ্য ইরানের নতুন প্রেসিডেন্টের শপথ অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার জন্য তেহরানে যাওয়া হানিয়াকে হত্যার কথা স্বীকার বা অস্বীকার কোনোটিই করেনি। যদিও ইরানের পরমাণু বিজ্ঞানী এবং সামরিক কমান্ডারসহ বিদেশে ‘শত্রুদের’ হত্যা করার দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে ইসরায়েলের। গাজায় প্রায় ১০ মাসের চলমান এই ইসরায়েলি আগ্রাসনের সময়ে ইরান অনেকটা ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করে চলেছে। দুই দেশের মধ্যে সর্বাত্মক যুদ্ধ এড়িয়ে এই অঞ্চলে তেহরানের মিত্র এবং প্রক্সি বাহিনীর মাধ্যমে তীব্রভাবে আক্রমণ বাড়ানোর মাধ্যমে ইসরায়েলের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে ইরান।

অবশ্য ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে দশকের পর দশক ধরে শত্রুতার সম্পর্ক বজায় রয়েছে এবং গত কয়েক দশকের মধ্যে চলতি বছরের এপ্রিলে ইসরায়েলের ওপর সবচেয়ে বড় এবং সবচেয়ে স্পষ্ট আক্রমণ চালায় ইরান। সিরিয়ার দামেস্কে বেশ কয়েকজন ইরানি সামরিক কমান্ডারকে হত্যার পাশাপাশি দূতাবাস প্রাঙ্গণে ইসরায়েলি হামলার প্রতিশোধ হিসেবে শত শত ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন নিক্ষেপ করে ওই হামলা চালিয়েছিল তেহরান।

আর এবার হানিয়া হত্যার জেরে সরাসরি ইসরায়েলে হামলার নির্দেশ দেওয়ার পর ইরানি কর্মকর্তারা বলেছেন, এটা এখনও স্পষ্ট নয়, ইরান ঠিক কতটা শক্তিশালী প্রতিক্রিয়া জানাবে এবং দেশটি (গত এপ্রিলের মতো) আবারও তার আক্রমণকে আরও ক্রমবর্ধমান উত্তেজনাপূর্ণ অবস্থা থেকে রক্ষা করার জন্য ক্যালিব্রেট করবে কিনা। ইরানের সামরিক কমান্ডাররা তেল আবিব এবং হাইফার আশপাশে সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্রের সংমিশ্রণে আরেকটি আক্রমণ করার কথা বিবেচনা করছেন, তবে বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা এড়াতে হবে।তারা জানিয়েছেন, এছাড়া পশ্চিম এশিয়ার এই দেশটির কাছে বিবেচনাধীন আরেকটি বিকল্প হচ্ছে- ইরান এবং অন্যান্য ফ্রন্ট থেকে সমন্বিত আক্রমণ চালানো, অর্থাৎ ইয়েমেন, সিরিয়া এবং ইরাকসহ যেখানে ইরান-সংশ্লিষ্ট মিত্র বাহিনী রয়েছে।

ইরানি এই কর্মকর্তারা আরও জানিয়েছেন, ইরানের সমস্ত রাষ্ট্রীয় বিষয়ে খামেনির কথাই শেষ কথা এবং তিনি দেশটির সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়কও বটে। যুদ্ধ আরও প্রসারিত হলে এবং ইসরায়েল বা যুক্তরাষ্ট্র ইরানে হামলা চালালে সেক্ষেত্রে ক্ষেত্রে আক্রমণ এবং প্রতিরক্ষা উভয় বিষয়েই পরিকল্পনা তৈরি করতে বিপ্লবী গার্ড এবং সেনাবাহিনীর সামরিক কমান্ডারদের নির্দেশও দিয়েছেন খামেনি।

এদিকে হানিয়ার মৃত্যু সম্পর্কে নিজের প্রকাশ্য বিবৃতিতে খামেনি ইঙ্গিত দিয়েছেন, ইরান সরাসরি প্রতিশোধ নেবে। তিনি বলেছেন, আমরা তার রক্তের প্রতিশোধ নেওয়াটা আমাদের কর্তব্য হিসেবে দেখছি, কারণ এই ঘটনা ইরানের ভূখণ্ডে ঘটেছে। নিউইয়র্ক টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, ইসরায়েল তার ‘কঠোর শাস্তি’ পাওয়ার জন্য মঞ্চ তৈরি করেছে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। এছাড়া নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, রেভোলিউশনারি গার্ডস এবং জাতিসংঘে ইরানের মিশনসহ অন্যান্য ইরানি কর্মকর্তারাও প্রকাশ্যে বলেছেন, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেবে ইরান এবং সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে নিজেকে রক্ষা করার অধিকার রয়েছে তেহরানের।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
Developer Ruhul Amin