
ফরিদপুর প্রতিনিধি
ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে অন্তঃসত্ত্বা নারী শিশুসহ ৫ জনকে পিটিয়ে আহত করেছে বখাটের দল। ঈদ উপলক্ষ্যে স্বজনদের নিয়ে ঘুরতে বের হলে প্রথমে উত্যক্ত করার পর প্রতিবাদ জানালে এ হামলা করা হয় বলে জানা গেছে। শুক্রবার (৩০ জুন) সন্ধার আগে উপজেলার ময়না ইউনিয়নের ঠাকুরপুর ব্রীজ সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় স্থানীয় থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগিরা।
বখাটেদের হামলায় আহতরা হলেন, উপজেলার ময়না ইউনিয়নের ইছাখালী গ্রামের নুরুল শেখের ছেলে আরমান শেখ (২৩), তার অন্তঃস্বত্তা স্ত্রী আছিয়া বেগম (২০), আমানউল্লাহ (১৫), রোজিনা (৩০) ও সাবিনা (২৫), লিখন (১০) । গুরুতর আহতরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
স্থানীয় ও থানার অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, উপজেলার ময়না ইউনিয়নের ইছাখালী গ্রামের মো. নুরুল শেখের ছেলে আরমান শেখ তার স্ত্রী, শ্যালক ও বোনদের নিয়ে ঘুরতে বেরিয়েছিলেন শুক্রবার বিকেলে। সন্ধ্যার আগে বাড়ি ফেরার পথে ঠাকুরপুর বাজার সংলগ্ন এলাকায় ঠাকুরপুর গ্রামের মো. চুন্নু শেখের দুইছেলে মুস্তাফিজুর শেখ ও মাসুম শেখ, গুনবহা ইউনিয়নের অমৃতনগর গ্রামের আক্কাস আলীর ছেলে সামচু, নয়ন ও পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের আমগ্রাম বিশ্বাসপাড়ার মো. ফারুকের ছেলে সাকিব তাদের আজেবাজে কথা বলে উত্ত্যক্ত শুরু করে। পরবর্তীতে ভ্যানচালক আরমান শেখ এর প্রতিবাদ করলে ঠাকুরপুর ব্রীজের সামনে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে ঘুরতে আসা লোকজনের সাথে বখাটেদের হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এসময় আরমানের শ্যালক আমানউল্লাহ এগিয়ে এলে তাদের লাঠিসোটা দিয়ে পেটানো হয়। স্বামী ও ভাইকে বখাটেরা মারধর করছে এমন সময় আরমানের অন্ত:স্বত্ত্বা স্ত্রী আছিয়া বেগমসহ তার দুই বোন রোজিনা ও সাবিনা এগিয়ে এলে তাদেরও মারপিট করা হয়। তাদের চিৎকারে আশেপাশের লোক এগিয়ে এলে হামলাকারী বখাটেরা পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় শুক্রবার দিবাগত রাতেই বোয়ালমারী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন আহত আরমান শেখের বাবা মো. নুরুল শেখ।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মুস্তাফিজুর শেখ-মাসুম শেখসহ হামলাকারীরা এলাকায় না থাকায় তাদের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
থানায় অভিযোগকারী আহত আরমান শেখের বাবা মো. নুরুল শেখ বলেন, থানায় লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছি। আহতরা হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। আমি পরিবারের সদস্যদের উপর হামলাকারীদের উপযুক্ত চাই। এমন শাস্তি দেওয়া হোক যাতে ওরা আর কোনদিন মেয়ে-ছেলেকে উত্যক্ত না করে!
ঘটনারদিন বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জরুরি বিভাগে কর্মরত থাকা চিকিৎসক ডা. অতসী বিশ্বাস জানান, আহতদের ভর্তির পর চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও একজন অন্তঃসত্ত্বা নারী ভর্তি রয়েছেন। তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে সন্তান ভালো আছে।
অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা থানার উপপরিদর্শক সরোয়ারের হোসেন বলেন, অভিযোগটির তদন্ত চলমান রয়েছে। হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। অন্তসত্ত্বা নারীসহ কয়েকজন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।
ফরিদপুরের বোয়ালমারী থানার ওসি মুহাম্মদ আব্দুল ওহাব জানান, মেয়ে-ছেলেদের উত্যক্ত এবং মারধরের ঘটনায় থানায় একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তবে এখনো থানায় মামলা রুজু হয়নি। ঘটনা তদন্ত চলমান রয়েছে। এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।