মোঃ জিয়াউর রহমান স্টাফ রিপোর্টারঃ
কুষ্টিয়ায় পরকীয়ার জেরে মেঘলা খাতুন (২২) নামে এক গৃহবধূকে কুপিয়ে হত্যা করেছেন স্বামী। কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার (১৩ মে) রাত ১১টার দিকে তার মৃত্যু হয়েছে।
এর আগে রাত সাড়ে ৮টার দিকে কুষ্টিয়া শহরের হরিশংকরপুর এলাকায় নিজ বাড়িতে স্ত্রী ও দুই কন্যা শিশুকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ও মারপিট করে হত্যাচেষ্টা করে মামুন। তাদেরকে গুরুতর আহত করে নিজে নিজের মাথা ও গলায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।
এ ঘটনায় গুরুতর আহত অবস্থায় চারজনকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে। দুই শিশুসহ তাদের বাবা চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
নিহত মেঘলা খাতুন কুষ্টিয়া শহরের হরিশংকরপুর এলাকার মামুন আলীর স্ত্রী। আহতরা হলেন- কুষ্টিয়া শহরের হরিশংকরপুর এলাকার রবিউল ইসলামের ছেলে মামুন, চার বছর বয়সী কন্যা শিশু কুলসুম ও দেড় বছর বয়সী কন্যা শিশু জান্নাত। রবিউল একজন দিনমজুর। এছাড়াও সে রংমিস্ত্রির কাজ করেন। আগে সে ভাড়ায় রিকশা চালাতেন।
এ বিষয়ে মামুনের পরিবার, স্বজন ও প্রতিবেশীরা বলেন, মামুনের স্ত্রী মেঘলা পরকীয়ায় লিপ্ত ছিল। কিছুদিন আগে মেঘলা বাড়ি থেকে পরকীয়া প্রেমিকের কাছে চলে গিয়েছিল। পরকীয়ার জের ধরে মাঝে মধ্যেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হতো। এর জের ধরে আজ রাত সাড়ে ৮টার দিকে স্ত্রীকে বেধড়ক মারপিট করে এবং কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা করে মামুন।পরে দুই কন্যা শিশুকে আছাড় মারে এবং কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। এতে তারা তিনজনই গুরুতর আহত হয়। এরপর মামুন ধারালো অস্ত্র দিয়ে নিজেই নিজের মাথায় ও গলায় কুপিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। প্রতিবেশীরা তাদের গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেছেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় স্ত্রী মেঘলার মৃত্যু হয়েছে। বাকি তিনজনের অবস্থাও খারাপ।
এ বিষয়ে মামুনের মা সুফিয়া বেগম বলেন, পরকীয়ার কারণে মেঘলার সঙ্গে মামুনের পারিবারিক কলহ ছিল। এর আগে সংসার ছেড়ে মেঘলা আরেক জায়গায় চলে গিয়েছিল। দুই দিন আগে মেঘলাকে ফিরিয়ে এনেছে। আজকেও নাকি বউ মোবাইলে কার সঙ্গে কথা বলছিল। ছেলে তা হাতেনাতে ধরে ফেলে। এরপর বউ ও দুই মেয়েকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও মারপিট করে গুরুতর আহত করে এবং মামুন নিজেও আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। মেঘলার মৃত্যু হয়েছে, বাকিরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) হোসেন ইমাম বলেন, তিনজনকেই ধারালো কিছু দিয়ে মাথায় আঘাত করা হয়েছে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১১টার দিকে মায়ের মৃত্যু হয়েছে। শিশু দুটির অবস্থা আশঙ্কাজনক।বিষয়টি নিশ্চিত করে কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশাররফ হোসেন বলেন, পারিবারিক কলহের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।