
মোঃ জিয়াউর রহমান স্টাফ রিপোর্টারঃ
আত্মানুসন্ধানের বেড়িয়ে ছিলেন ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের মেয়ে দেবোরাহ কিউকারম্যান। নানা দেশ ঘুরে ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে আসেন বাংলাদেশে। লক্ষ্য ফকির লালন শাহের আখড়া। লালনের দর্শনে মুগ্ধ দেবোরাহ আর বাড়ি ফেরেননি। লালন দর্শনে দীক্ষা নেওয়ার জন্য শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার প্রাগপুর ইউনিয়নের দীঘিরপাড় এলাকার সাধুগুরু ফকির নহির শাহর।জায়গাটি ‘হেম আশ্রম’ নামেই পরিচিত। এখানে ঘরও বেঁধেছেন দেবোরাহ। ২০১৭ সালে লালনের তিরোধান দিবসে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার রাজন ফকিরকে বিয়ে করেন দেবোরাহ। দেবোরাহ কিউকারম্যান হয়েছেন দেবোরাহ জান্নাত। সাধুসঙ্গই তাঁর দৈনন্দিন রুটিন। মাঝে মধ্যে মাতৃভূমি ও পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে প্যারিসে যান দেবোরাহ।
দীর্ঘ ৮ বছরের সাধনায় লালন দর্শনের দিক্ষায় উপযুক্ত হওয়ায় গত মঙ্গলবার ফকির গুরু নহির শাহর নির্দেশে খেলাফত গ্রহণ করেছেন দেবোরাহ জান্নাত ও তার স্বামী রাজন ফকির। ইহজাগতিক লোভ, লালসা, মায়া-মমতা ও মোহ ত্যাগ করে জীবিত থেকেই গ্রহণ করলেন মরণের স্বাদ। লালন দর্শনের দিক্ষায় অসংখ্য সাধু/ফকির খেলকা বা খেলাফত গ্রহণ করলেও দেশের ইতিহাসে দেবোরাহ জান্নাত প্রথম যিনি বিদেশি নাগরিক হিসেবে খেলকা বা খেলাফত প্রাপ্ত হলেন।
তাদের খেলাফত গ্রহণ উপলক্ষে হেম আশ্রমে সাধুসঙ্গ অনুষ্ঠানে আগমন ঘটেছিল হাজারো সাধুগুরু বাউল এবং লালন অনুসারীদের। দেশের নানা প্রান্ত থেকে লালন ভক্ত, বাউল, সাধুগণ হেম আশ্রমে জড়ো হন। রাত ৯টায় মুড়ি সেবার পর শুরু হয় সাধুসঙ্গ অনুষ্ঠান।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিশিষ্ট লালন গবেষক সাইমন জাকারিয়া বলেন, লালন দর্শনের করণ-কারণ সাধনার যে দীক্ষাগুলো আছে তা তিনি সুন্দরভাবে অর্জন করতে পেরেছেন বলেই সাধুগুরু তাকে খেলাফত দিয়েছেন। দেশের ইতিহাসে তিনিই প্রথম বারের মতো যিনি লালনপন্থায় দীক্ষা নিয়ে খেলাফত অর্জন করছেন।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মাজহারুল হক
Email: news.pratidinerbangladesh@gmail.com
ফোনঃ 01752-388928
প্রধান কার্যালয়ঃ লেভেল ১৫/এ, ১২ সোনারতরী টাওয়ার, বাংলামোটর, ঢাকা।
Copyright © 2025 প্রতিদিনের বাংলাদেশ. All rights reserved.