মোঃ হুমায়ুন কবির গৌরীপুর প্রতিনিধিঃ
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার কলতাপাড়া বাজারে গত ২০ জুলাই পুলিশের গুলিতে নিহত হয় এইচএসসি পরীক্ষার্থী বিপ্লব হাসান। তাঁর বাবা বাবুল মিয়া দীর্ঘদিন যাবৎ হার্টের সমস্যায় ভুগছেন। আর্থিক সংকটের কারণে তিনি চিকিৎসা করাতে পারছিলেন না। তাঁর চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছে গৌরীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর গৌরীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) রাজেন্দ্র দেবনাথের নজরে আসলে তিনি বাবুলের বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
২৫ আগস্ট রোববার দুপুরে বাবুল মিয়া হাসপাতালে আসলে তাঁর প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ভর্তি করা হয়। তাঁর সমস্ত চিকিৎসার ব্যয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বহন করবে বলে জানান আরএমও।
গৌরীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালের উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ইকবাল আহমেদ নাসের আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শহীদ বিপ্লবের বাবা বাবুল মিয়ার অসুস্থতার বিষয়টি আমরা আজকের পত্রিকার সংবাদের মাধ্যমে জানতে পারি। উনার যাবতীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও চিকিৎসার ব্যয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বহন করবে।
বাবুল মিয়া বলেন, তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ হার্টের সমস্যায় ভুগছেন। কাজ করলে বুকে ব্যথা হয়। টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছিলেন না। ছেলের মৃত্যুর পর মেয়েদের লেখাপড়া ও সংসারের ব্যয় মিটাতে হিমশিম খাচ্ছিলেন তিনি। পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর অনেকেই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর চিকিৎসার দায়িত্ব গৌরীপুর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিয়েছে।
গুলিতে উপার্জনক্ষম সন্তানকে হারিয়ে দিশেহারা বিপ্লবের পরিবারগুলিতে উপার্জনক্ষম সন্তানকে হারিয়ে দিশেহারা বিপ্লবের পরিবার। গৌরীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শাকিল আহমেদ বলেন, সমাজসেবা কার্যালয়ের মাধ্যমে দরিদ্র রোগীদের চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহযোগিতার সুযোগ রয়েছে। বিপ্লব হাসানের বাবা বাবুল মিয়ার চিকিৎসার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি সমাজসেবা থেকেও সহযোগিতা করা হবে।
উল্লেখ্য, শহীদ বিপ্লব হাসান কলতাপাড়া মোজাফফর আলী উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজ থেকে এবার এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছিলেন। এক ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তিনি সবার বড়। তাঁর বাবা বাবুল মিয়া দীর্ঘদিন যাবৎ অসুস্থ থাকায় স্থানীয় একটি কারখানায় শ্রমিকের কাজ করে পরিবারের হাল ধরে ছিলেন বিপ্লব। দুই বোনের একজন অষ্টম ও অন্যজন পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী। উপার্জনক্ষম একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে পাগল প্রায় মা-বাবা। পুত্রশোক আর আর্থিক কষ্টে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তাঁরা।