বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:৫০ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
নোটিশঃ
২৪ ঘন্টায় লাইভ খবর পেতে চোখ রাখুন প্রতিদিনের বাংলাদেশ ওয়েবসাইটে

গৌরীপুরে প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির বিরুদ্ধে ৪০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

Reporter Name / ৪৭ Time View
Update : মঙ্গলবার, ২৭ আগস্ট, ২০২৪, ১১:৫০ অপরাহ্ন

এনামুল হক ছোটনঃ

ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার পাছার উচ্চ বিদ্যালয়ের ল্যাব অ্যাসিস্ট্যান্টসহ ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগে প্রধান শিক্ষক সহ ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেও অজ্ঞাত কারণে কোন প্রতিকার না পাওয়ায় অভিযোগকারী ও স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

জানা গেছে, ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আব্দুল মান্নান ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা সহ পাছার উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ক্ষমতার অপব্যবহার করে গোপনে ল্যাব অ্যাসিস্টেন্ট, নিরাপত্তা কর্মী, আয়া ও পরিচ্ছন্ন কর্মী নিয়োগের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেন এবং বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে তা গোপন রাখেন।

প্রধান শিক্ষকের কাছে এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষকগণসহ একাধিক ব্যক্তি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির বিষয়ে জানতে চাইলেও তিনি তা সেসময় অস্বীকার করেছেন। যেকারণে অনেক যোগ্য প্রার্থীরা নির্দিষ্ট পদে আবেদন করতে পারেননি। জানা যায়, পরবর্তীতে গত বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি ওই দিন গোপনে প্রধান শিক্ষক শাহ আরশাদুল হক ও ম্যানেজিং কমিটি নিয়োগ বোর্ডের সকলকে ম্যানেজ করে নিয়োগ পরীক্ষা সমাপ্ত করেন এবং মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে পছন্দের প্রার্থীদের নিয়োগ দেন।

এদিকে ল্যাব অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে নিয়োগ পাওয়া শিলা চৌধুরীর নেই কোন কম্পিউটার জ্ঞান। ল্যাব অ্যাসিস্ট্যান্ট শিলা চৌধুরী এস এস সি ২০০৮ সালে এবং এইচ এস সি  পাস করেন ২০১০। সেই সময় শিক্ষাক্রমে ছিল না কোন আইসিটি বিষয়ক পাঠ্যবই এবং তার কম্পিউটার নিয়ে কোন প্রশিক্ষণ নেই বলেও দাবি করেন এলাকাবাসী।

যদিও এ পদে নিয়োগ পেতে হলে একজন প্রার্থীর ন্যূনতম যোগ্যতা ধরা হয়েছে শিক্ষা বোর্ড হতে কম্পিউটার/তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিসহ বিজ্ঞান বিভাগে এইচ.এস.সি/সমমান অথবা বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষাবোর্ড থেকে ৩ বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা/সমমান এবং কম্পিউটার অপারেটিংয়ে দক্ষতা থাকতে হবে। অন্যদিকে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় গড়মিল থাকায় এখনও স্থায়ী বেতনভুক্ত হতে পারেননি ওই স্কুলের ল্যাব অ্যাসিস্ট্যান্ট শিলা চৌধুরী।

অন্যদিকে,পত্রিকায় উল্লেখিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে অফিস সহায়কের পদ উল্লেখ না থাকলেও নিরাপত্তা কর্মী পদে আবেদন করে অফিস সহায়ক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন সোহাগ মিয়া নামের একজন। নিয়োগ সংক্রান্ত এ জটিলতা  কারণে নিয়োগের প্রথম ৬ মাস তার বেতন বন্ধ ছিল। এই বিষয়ে এলাকাবাসী অভিযোগ করে জানান, প্রধান শিক্ষক অনিয়ম করে নিয়োগ বাণিজ্যের মাধ্যমে  কর্মচারী নিয়োগ দিয়েছেন-যা নিয়োগ পাওয়ার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত আমরা স্থানীয়রা কেউ জানতাম না। হঠাৎ করে দেখি তিনজন ব্যক্তি বিদ্যালয়ে কাজ করছেন। আমরা এই অবৈধ নিয়োগ বাতিল করে যোগ্যতার ভিত্তিতে জনবল নিয়োগের দাবি জানাই।

নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক সচেতন মহলের কয়েকজন জানান, আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান ও কমিটির সভাপতি আব্দুল মান্নান দলীয় প্রভাব কাটিয়ে  ক্ষমতার অপব্যবহার করতেন। ফলে বিদ্যালয়টি অনিয়ম আর দুর্নীতির আখাড়ায় পরিণত করেছেন প্রধান শিক্ষক। এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিস, উপজেলা নির্বাহী অফিস, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, দুর্নীতি দমন কমিশন সহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েও কোন লাভ হচ্ছে না। অদৃশ্য ইশারায় অভিযোগের বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়া হয়েছে। আমরা এর সুষ্ঠু সমাধানসহ অবৈধ নিয়োগ বাতিল ও প্রধান শিক্ষকের বিচারের দাবি জানাই।

এই অবৈধ নিয়োগের বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহ আরশাদুলের কাছে জানতে চেয়ে তার মুঠোফোনে একাধিকবার কল করেও তাকে পাওয়া যায়নি। পাশাপাশি ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি, সাবেক চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আব্দুল মান্নানকে কল দিয়ে মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

এ নিয়োগ বাতিলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের  হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন স্থানীয় বাসিন্দাসহ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ও অভিভাবকরাগণ।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
Developer Ruhul Amin