গাজীপুরের টঙ্গীতে কেমিক্যাল গুদামের আগুন নেভাতে গিয়ে দগ্ধ ফায়ার কর্মীদের সর্বোচ্চ মানের চিকিৎসা নিশ্চিত করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। মঙ্গলবার সকালে আহত (দগ্ধ) ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের দেখতে রাজধানীর জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট পরিদর্শন শেষে ব্রিফিংকালে তিনি এ কথা জানান।
উপদেষ্টা বলেন, গতকাল টঙ্গীতে কেমিক্যাল গোডাউনে দুর্ঘটনায় দগ্ধ হয়ে আমাদের চারজন ফায়ার ফাইটার বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে দুইজনের দগ্ধের পরিমাণ বেশি আর দুইজনের কম। তিনি বলেন, জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট একটা আন্তর্জাতিক মানের হাসপাতাল। এখানকার চিকিৎসা ব্যবস্থা খুবই ভালো। এখানকার ডাক্তাররা-সহ সংশ্লিষ্টরা সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। তিনি আরো বলেন, আমরা মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে দোয়া করি তারা (আহত দগ্ধরা) যেন দ্রুত সুস্থ হয়ে যায়।
জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, দগ্ধ ফায়ারকর্মীদের সুচিকিৎসায় আমাদের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হবে। এ ব্যাপারে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবং জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটের পরিচালককে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। উপদেষ্টা বলেন, আহতদের চিকিৎসায় কোনো ধরনের অবহেলা বা গাফিলতি করা যাবে না। উপদেষ্টা আরো বলেন, আহতদের সর্বোচ্চ মানের চিকিৎসা নিশ্চিতকরণে সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
ব্রিফিংয়ে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন বলেন, দগ্ধদের চিকিৎসায় আমাদের একটা মনিটরিং টিম সবসময় কাজ করবে। তিনি বলেন, উত্তরা মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান দুর্ঘটনায় আহতদের চিকিৎসা দেশে না বিদেশে করা হবে— তখন এ ধরনের প্রশ্ন এসেছিল। তিনি আরো বলেন, এ বিষয়ে আমরা সমন্বিতভাবে সিদ্ধান্ত নেব। এক্ষেত্রে আবেগকে প্রাধান্য না দিয়ে বিজ্ঞানকে প্রাধান্য দেওয়া হবে। রোগীদের সুচিকিৎসায় আমাদের পক্ষ থেকে যা যা করার দরকার তার সবই করা হবে। এ সময় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ জাহেদ কামাল এনডিসিসহ জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও চিকিৎসকরা উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন আহত ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা হলেন টঙ্গী ফায়ার স্টেশনের ওয়্যারহাউজ ইন্সপেক্টর খন্দকার জান্নাতুল নাঈম (৪২% দগ্ধ), ফায়ার ফাইটার শামীম আহমেদ (১০০% দগ্ধ), ফায়ার ফাইটার মো. নূরুল হুদা (১০০% দগ্ধ) ও ফায়ার ফাইটার মো. জয় হাসান (৫% দগ্ধ)। তা ছাড়া দুর্ঘটনায় আহত কেমিক্যাল গোডাউনের কর্মচারী আল আমিন বাবু (৯৫% দগ্ধ) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। উল্লেখ্য, গতকাল (২২ সেপ্টেম্বর) গাজীপুরের টঙ্গীর সাহারা মার্কেটে একটি কেমিক্যাল গোডাউনে দুর্ঘটনায় কারখানাটিতে আগুন লাগলে আগুন নেভাতে গিয়ে টঙ্গী ফায়ার স্টেশনের চারজন ফায়ার কর্মী ও কারখানার একজন কর্মচারী দগ্ধ হয়েছেন।