শনিবার, ০৩ মে ২০২৫, ১২:৫৪ পূর্বাহ্ন
নোটিশঃ
২৪ ঘন্টায় লাইভ খবর পেতে চোখ রাখুন প্রতিদিনের বাংলাদেশ ওয়েবসাইটে

নানা সমস্যায় জর্জরিত তালতলীর শুঁটকি পল্লী

Reporter Name / ২৬ Time View
Update : বুধবার, ১৩ নভেম্বর, ২০২৪, ৭:৩৩ অপরাহ্ন

কাওসার হামিদ, তালতলী (বরগুনা)
বরগুনার তালতলীর বিভিন্ন চরে শুরু হয়েছে শুঁটকি তৈরির কাজ। শীত এগিয়ে আসতেই এই উপজেলায় প্রায় ৮ হাজার নারী-পুরুষ শুঁটকি তৈরির জন্য ছোট ছোট ঘর বানানো শেষ হয়েছে। এই সময় জেলেপল্লিগুলোতে বাড়তে শুরু করে শুঁটকি ব্যবসায়ী, মালিক ও শ্রমিকদের আনাগোনা। কিন্তু নানা সমস্যায় জর্জরিত এ শুঁটকি পল্লী। এখানে নেই সুপ্রিয় পানি ও পয়:নিস্কাশনের ব্যবস্থা। নেই ভালো যোগাযোগ ব্যবস্থাও।
উপজেলার আশারচর, সোনাকাটা, জয়ালভাঙ্গাচরের শুঁটকিপল্লিতে নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত এই ৫ মাস ধরে চলে শুঁটকি প্রক্রিয়াজাতকরণের কাজ চলে। এই সময় সরব থাকেন শুঁটকিপল্লির ক্রেতা-বিক্রেতা ও শ্রমিকেরা। সাগর-নদী থেকে পুঁটি, শৌল, টেংরা, খলিশা, পাবদা, কৈ, শিং, মাগুর, মেনি, বৈরাগী ফলিসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ধরে শুঁটকি তৈরির কাজ করেন।  প্রতিটি শুঁটকিপল্লি থেকে প্রতি সপ্তাহে ১০০ থেকে ১৫০ মণ মাছ দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হয়। নদী থেকে কাঁচা মাছ শুঁটকিপল্লিতে নিয়ে আসার পর নারী শ্রমিকেরা তা পরিষ্কার করেন। এরপর মাছগুলো পানিতে ধুয়ে বানায় (মাচা) শুকানো হয়। তিন-চার দিনের রোদে মাছগুলো শুকিয়ে শক্ত হয়। এই চরের শুঁটকি চট্টগ্রাম, সৈয়দপুর, খুলনা, জামালপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি হচ্ছে।
জানা যায়, এখানকার শুঁটকিতে কোনো প্রকার কীটনাশক বা অতিরিক্ত লবণ দেওয়া হয় না বলে চাহিদা বেশি। বর্তমানে প্রতি কেজি ছুরি মাছের শুঁটকি ৮০০-৯০০ টাকা, রুপচাঁদা ১ হাজার দুই শত থেকে দেড় হাজার, মাইট্যা ৯০০ থেকে ১ হাজার, লইট্টা ৬৫০-৭০০, চিংড়ি ৭৫০-৯০০ টাকা এবং অন্যান্য ছোট মাছের শুঁটকি ৪০০-৫৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
আশারচর শুঁটকিপল্লিতে গিয়ে দেখা যায়, ছয় শতাধিক জেলে ও মালিকপক্ষ শুঁটকি উৎপাদন করার লক্ষ্যে ছোট ছোট ২৪টি ঘর তৈরি করছেন। কেউ কেউ ঘর উঠিয়ে শুঁটকি তৈরিতে মাছ রোদে শুকাচ্ছেন। একের পর এক মাছ ধরা ট্রলার সমুদ্র থেকে আসছে। ২৫ প্রজাতির মাছের শুঁটকি তৈরি করা হয় এখানে। এর মধ্যে রুপচাঁদা, ছুরি, কোরাল, সুরমা, লইট্টা, পোপা অন্যতম। যেসব জেলেদের ঘর ওঠানো শেষ হয়েছে তাঁরা মাছগুলো বাঁশের মাচায় ও মাদুরে করে রোদে শুকাচ্ছেন।
জানা যায়, এই শুঁটকিপল্লিতে কাজ করে জীবিকা চলে হাজারো শ্রমিকের। এ ছাড়া এখানকার শুঁটকি মাছের গুঁড়া সারা দেশে পোলট্রি ফার্ম ও ফিশ ফিডের জন্য সরবরাহ হয়ে থাকে। এদিকে ডিজেলের দাম বেশি থাকায় চিন্তার ভাঁজ এখানকার ব্যবসায়ীদের মধ্যে।
স্থানীয় একাধিক জেলে ও ব্যবসায়ী বলেন, প্রধান সড়ক থেকে শুঁটকিপল্লি পর্যন্ত এক কিলোমিটার রাস্তাটা খুবই খারাপ। এই রাস্তা মেরামত করে দিলে আমরা শুঁটকি ট্রাকে লোড দিতে পারব। এতে পরিবহন খরচ কম হবে। এ ছাড়া টয়লেট ও বিশুদ্ধ পানির কোনো ব্যবস্থা নেই।
ব্যবসায়ী জাফর আকন বলেন, শুঁটকি তৈরির আগেই এখান থেকে সরকারিভাবে এসব শুঁটকি বিদেশে রপ্তানির উদ্যোগ গ্রহণ করা হোক। কারণ, দেশ থেকে সরকারিভাবে শুঁটকি রপ্তানির কোনো ব্যবস্থা নাই। রুপচাঁন হাওলাদার আরও বলেন, ‘বাজারে সবকিছুর দাম বেশি থাকায় এই বছর ব্যবসা কেমন হবে, এই নিয়ে চিন্তায় আছি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার উসেম্ম সালমা বলেন, যে কোনো প্রকল্প থেকে রাস্তাটি ঠিক দেওয়ার জন্য চেষ্টা করা হবে। এ ছাড়া বিশুদ্ধ পানির জন্য টিউবওয়েল ও টয়লেটের ব্যবস্থা করা হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
Developer Ruhul Amin