বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ০২:০০ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
দুর্গাপুরে বন্ধুর প্রেমিকাকে ধর্ষণের অভিযোগে ছাত্রদল নেতা আটক জনবান্ধব পুলিশ হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলতে হবে পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মানবিক করিডোর নিয়ে কারও সঙ্গে আলোচনা করেনি সরকার : প্রেস সচিব অপু বিশ্বাস-শাওন-জায়েদ খান-নুসরাত ফারিয়াসহ ১৭ অভিনয়শিল্পীর নামে মামলা পুতুলের ফ্ল্যাট ক্রোকের আদেশ, রিসিভার নিয়োগের অনুমতি ঢাকা পলিটেকনিকে তালা ঝুলিয়ে দিলেন শিক্ষার্থীরা গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় একদিনে নিহত ৫১ ফিলিস্তিনি পুলিশ সপ্তাহ উদ্বোধন করলেন প্রধান উপদেষ্টা কুষ্টিয়ায় জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস পালিত চাঁদা না দেওয়ায় ব্যবসায়ীকে মারধর ও ছিনতাইয়ের অভিযোগ থানায়
নোটিশঃ
২৪ ঘন্টায় লাইভ খবর পেতে চোখ রাখুন প্রতিদিনের বাংলাদেশ ওয়েবসাইটে

মাগুরায় আলোচিত পলিথিন ডাক্তারের সিজারিয়ান অপারেশনেএক প্রসুতির মৃত্যু

Reporter Name / ১২৮ Time View
Update : বৃহস্পতিবার, ৩০ মে, ২০২৪, ৩:১৪ অপরাহ্ন

মাগুরা প্রতিনিধি:

মাগুরায় আলোচিত পলিথিন ডাক্তারের সিজারিয়ান অপারেশনে সীমু খাতুন (১৯) নামে এক প্রসুতি মায়ের মৃত্যু হয়েছে বলে স্বজনদের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

মাগুরা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের পূর্বপাশে অবস্থিত জাহান প্রাইভেট হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে বুধবার (২৯শে ) মে সকালে সীমু খাতুন নামে এক প্রসূতির সিজারিয়ানের জন্য অস্ত্রপচার করেন ডাক্তার মাসুদুল হক। অস্ত্র প্রচারের পর ঐ প্রসূতির মৃত্যু হয়।
মৃত মোছা. সীমু খাতুন মাগুরা সদর উপজেলার বেল নগর গ্রামের মো: মনিরুল ইসলামের মেয়ে এবং পার্শ্ববর্তী ফরিদপুর জেলার মধুখালী উপজেলার কামারখালী আড়পাড়া গ্রামের মো: নূর আলীর স্ত্রী।

নিহতের পিতা মনিরুল ইসলাম বলেন, বুধবার (২৯ মে) সকাল ১০ টায় সিজারিয়ান অপারেশনের জন্য তার কন্যা সীমু ভর্তি হন মাগুরা শহরের জাহান প্রাইভেট হাসপাতালে । এ সময় ডাক্তার মাসুদুল হক সিজারিয়ান অপারেশনের সিদ্ধান্ত নিয়ে সকাল ১১ টায় সীমু খাতুনকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে সিজার করেন এবং একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। সন্তান সুস্থ থাকলেও মায়ের অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়, প্রেশার বৃদ্ধি পায় এবং প্রস্রাব বন্ধ হয়ে যায়, এতে তার শারিরীক অবস্থার অবনতি হয়। এভাবে সারাদিন ব্লিডিং বন্ধ না হওয়ায় বিকাল সাড়ে পাঁচটায় রোগীর নিশ্চিত মৃত্যু জানতে পেরে তড়িঘড়ি করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। সীমু খাতুনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজে নিয়ে গেলে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এবং ফরিদপুর মেডিকেলের কর্তব্যরত চিকিৎসক এটাও জানান, রোগীকে ফরিদপুর মেডিকেলে নিয়ে যাওয়ার প্রায় তিন ঘন্টা আগে তার মৃত্যু হয়েছে।
পরে ফরিদপুর থেকে রাত ১ টার সময় সুমী খাতুনের মরদেহ মাগুরার বেলনগর গ্রামে তার বাবার বাড়িতে নিয়ে আসা হয়।নিহতের ভাই মুমিন অভিযোগ করেন, তার বোন সীমুকে বুধবার সকাল দশটায় সিজারিয়ান অপারেশনের জন্য জাহান ক্লিনিকে আনা হলে ডাক্তার মাসুদুল হক ভর্তির পরপরই তড়িঘড়ি পরীক্ষা নিরীক্ষা ছাড়াই অস্ত্রপচার করেন । এই অস্ত্রপচারের পর তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে পরে বিকালে তার মৃত্যু হয়। রোগীর মৃত্যু নিশ্চিত হয়েও ডাক্তার মাসুদুল হক তড়িঘড়ি করে অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে হস্তান্তরের ব্যবস্থা করেন। ফরিদপুর মেডিকেল কলেজের ডাক্তারা দুই থেকে তিন ঘন্টা আগেই রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানান ।

ডাক্তার মাসুদুল হকের অপচিকৎসা কারণে তার বোনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানান তিনি । এ জন্য দায়ী ডাক্তার মাসুদুল হকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিরও দাবিও জানান।

উল্লেখ্য, মাগুরা জাহান ক্লিনিকের মালিক ডাক্তার মাসুদুল হকের অপচিকিৎসার চিত্র তুলে ধরে ২০১৯ সালের অপচিকিৎসার শিকার ভুক্তভোগীদের অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে মাগুরার পলিথিন ডাক্তার আখ্যা দিয়ে জাতীয় গণমাধ্যম গুলিতে একাধিক প্রতিবেদন প্রচারসহ আদালতে এক ডজনেরও বেশি মামলা দায়ের হয়েছিল । সেই সাথে মাগুরা থেকে এই চিকিৎসককে বিতাড়িত করতে একাধিকবার ঝাড়ুমিছিল,মানবন্ধনসহ বিক্ষোভ প্রদর্শন করে সাধারণ মানুষ।

এতো কিছুর পরেও মাগুরার সাধারণ রোগীদের তার নিয়োজিত দালালের মাধ্যমে নিজের জাহান ক্লিনিকসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে অপচিকিৎসার রমরমা বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।

এ অবস্থায় পলিথিন ডাক্তার মাসুদুল হকসহ সকল অপচিকিৎসক ও স্বাস্থ্য সেবার নামে নিম্নমান সম্পূর্ন ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা করে মানুষের জীবন নিয়ে খেলায় মগ্ন সংশ্লিষ্ট সকলের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী তুলেছেন বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের মানুষ।

এ বিষয়ে মাগুরা জাহান প্রাইভেট হাসপাতালের ডা: মাসুদুল হক বলেন, বুধবার (২৯ মে) সকাল সাড়ে ১১ টায় সিজারিয়ান এর মাধ্যমে কন্যা সন্তান জন্মদেন সীমু খাতুন। এ সময় শিশু কন্য ও মা দুজনই সুস্থ ছিল। কিন্তু সন্তান জন্ম দেওয়ার ৪ থেকে ৫ ঘন্টা পর থেকে প্রসুতি মায়ের প্রেশার হাই হয়ে শরীরে কাপুনি দিতে থাকে। তখন তার অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য রোগীকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে রোগীর স্বজনদের মাধ্যমে জানতে পারি সীমু খাতুন মারা গেছে।এ ব্যাপারে মাগুরার সিভিল সার্জন মোঃ শামিম কবির জানান, মাগুরা শহরের জাহান ক্লিনিকে ডাক্তার মাসুদুল হক একটি সিজারিয়ান অপারেশন করেন এবং পরবর্তীতে জানতে পারি রোগীর মৃত্যু হয়েছে, এবিষয়ে আমরা একটি তদন্ত কমিটি গঠন করি এবং সেখানে মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ পাওয়া যায় ও পরিবেশের লাইসেন্সের মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে যাওয়ায় ক্লিনিকটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এবিষয়ে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পরে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
Developer Ruhul Amin