অনলাইন ডেস্ক: বলিউড তারকা সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর পর তার কথিত প্রেমিকা রিয়া চক্রবর্তীর জীবনের ওপর দিয়ে এক প্রকার ঝড় বয়ে গেছে। মাদক–কাণ্ডে নাম জড়িয়ে গ্রেপ্তারের পর দীর্ঘ সময় কারাবাস করতে হয়েছে এই অভিনেত্রীকে। তবে মুক্তির পর দীর্ঘদিন নিজেকে খোলসবন্দী করে রেখেছিলেন রিয়া। অবশেষে জেলের জীবন কেমন ছিল তা নিয়ে মুখ খুলেছেন এই বাঙালি অভিনেত্রী। ভারতীয় গণমাধ্যম বলছে, সম্প্রতি চেতন ভগতের ইউটিউব চ্যানেলে নিজের কারাবাসের বিষয়ে কথা বলেছেন রিয়া। মূলত সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর পর রিয়ার নামে অভিযোগ করেন সুশান্তের বাবা। পরে প্রায় দুই মাস মুম্বাইয়ের বাইকুল্লা জেলে বন্দী ছিলেন রিয়া। সুশান্ত সিংয়ের রহস্যজনক মৃত্যুতে রিয়া ছাড়াও তার ভাই শোইক চক্রবর্তীকেও গারদে কাটাতে হয়।
জেলের জীবন নিয়ে লেখক চেতন ভগতের সঙ্গে খোলামেলা আলাপে রিয়া জানান, সুশান্তের মৃত্যুর পর যেভাবে তাকে নিয়ে কাটাছেঁড়া চলছিল, তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, তাকে জেলে যেতেই হবে। করোনাকালে জেলবন্দী হওয়ায় প্রায় ১৪ দিন একা একটি কক্ষে থাকতে দেয়া হয় রিয়াকে। তিনি জানান, এসময় খাওয়ার জন্য মিলত শুধুমাত্র রুটি আর ক্যাপসিকাম। তার কথায়, করোনাকালের কিছু নির্দিষ্ট নিয়মের জন্য ১৪ দিন জেলের একটা ঘরে সম্পূর্ণ একা রাখা হয়। আমাকে জিজ্ঞেস করা হতো, দুপুরে খাব কি না। সত্যি বলতে এত খিদে পেত এবং ক্লান্ত থাকতাম যে, যা দেয়া হতো, তা-ই খেয়ে নিতাম। সে সময় আমাকে রুটি আর ক্যাপসিকাম খেতে দেয়া হতো। সেটা তরকারির মতো ছিল, তেমনটি ভাবার কোনো কারণ নেই। তা ছিল কেবল ক্যাপসিকাম ও পানি।
রিয়া জানান, জেলে সকাল ৬টায় নাশতা তাকে দেয়া হতো, আর বেলা ১১টায় দুপুরের খাবার এবং বেলা ২টায় রাতের খাবার দেয়া হতো। রিয়া বলেন, ‘জেল ব্রিটিশ নিয়মে চলে, তাই দুপুরেই রাতের খাবার দেয়া হতো। আর সকাল ৬টায় আমার কক্ষের তালা খোলা হতো, যা বন্ধ করে দেয়া হতো বিকেল ৫টায়। এ সময়ের মধ্যে গোসল করা যেত এবং লাইব্রেরি থেকে ঘুরে আসার সুযোগ মিলত। বেশির ভাগ রাতের খাবার রেখে দিতাম, পরে সাতটা কি আটটার দিকে খেয়ে নিতাম।’
জেলবন্দী সময়ে রিয়ার জীবনবোধ তৈরি হয় জানিয়ে সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘জেলবন্দী থাকাকালে দেখেছি, অনেক বন্দীর পরিবারের সামর্থ্য নেই, ৫-১০ হাজার রুপির বিনিময়ে তাদের ছাড়িয়ে নিয়ে যাবে। আমার তো তা-ও পরিবার ও বন্ধুরা আছে। আমার নিজেকে ভাগ্যবান বলে মনে হতো। তবে জেলে থাকার সময় প্রচণ্ড মানসিক চাপে ছিলেন জানিয়ে রিয়া জানান, সেখানে নোংরা বাথরুম বা শারীরিক অসুবিধা কিছুই মনে হতো না।