রবিবার, ০৪ মে ২০২৫, ০১:৪০ অপরাহ্ন
নোটিশঃ
২৪ ঘন্টায় লাইভ খবর পেতে চোখ রাখুন প্রতিদিনের বাংলাদেশ ওয়েবসাইটে

২১ দফার বাস্তবায়ন চায় বাংলাদেশ স্বতন্ত্র প্রার্থী ঐক্য পরিষদ

Reporter Name / ১২ Time View
Update : শনিবার, ৩ মে, ২০২৫, ১১:৩২ পূর্বাহ্ন

  • সংস্কার শেষে মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়নের জন্য সরকারকে এক বছর সময় দিতে চায়
  • দাবি না মানলে ভূমি মন্ত্রণালয় ও ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন ঘেরাও কর্মসূচি দেয়া হবে
  • আমলারা সকারের নির্দেশ না মানায় সরকার স্বাধনিভাবে কাজ করতে পারছে না
  • নির্বাচনী জোট গঠনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, কাজও চলছে

নিজস্ব প্রতিবেদক:  অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে ২১ দফা দাবি বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ স্বতন্ত্র প্রার্থী ঐক্য পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোহাম্মদ আব্দুর রহিম। আজ শনিবার (৩ মে) সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) শফিকুল কবির মিলনায়তনে বাংলাদেশ স্বতন্ত্র প্রার্থী ঐক্য পরিষদ আয়োজিত ২১ দফা বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জ নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও সুধী সমাজের সঙ্গে আলোচনা শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আহ্বান জানান। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন- দুর্নীতি বিরোধী জাতীয় সমন্বয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র সারোয়ার ওয়াদুদ চৌধুরী। ২১ দফা দাবি না মানলে ভূমি মন্ত্রণালয় ও ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন ঘেরাও কর্মসূচি দেয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী ঐক্য পরিষদের চেয়ারম্যান বলেন, বাংলাদেশ স্বতন্ত্র প্রার্থী ঐক্য পরিষদ ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতনের লক্ষ্যে দীর্ঘদিন আন্দোলন সংগ্রামে বিশেষ অবদান রেখেছেন।

ফ্যাসিস্ট পতনের পর গত বছরের আগস্টের ১৭ তারিখ থেকে টানা ৭ দিন বিক্ষোভ, অনশন ও মানববন্ধন, সংবাদ সম্মেলন করে আমাদের ৮ দফা দাবি দ্রুত বাস্তবায়নের আহ্বান জানাই। সরকারের পক্ষ থেকেও দাবিগুলো বাস্তবায়নের জন্য আমাদের আশ্বস্থ করা হয় কিন্তু এখন পর্যন্ত দাবিগুলো বাস্তবায়ন করা হয়নি। বরং দাবিগুলো বাস্তবায়ন না করে নানা ছলচাতুরির আশ্রয় নেয়া হচ্ছে। এভাবে অন্তর্বর্তী সরকার চলতে থাকলে তাদের সব অর্জন ব্যর্থ হবে। তিনি আরো বলেন, আমলারা সরকারের নির্দেশ মানছেন না। এজন্য সরকারও স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছে না। সংস্কার শেষে মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়নের জন্য সরকারকে এক বছর সময় দিতে চায় স্বতন্ত্র প্রার্থী ঐক্য পরিষদ এমন মন্তব্য করে আব্দুর রহিম বলেন, আমরা নির্বাচনী ঐক্য গড়ার কাজ ইতিমধ্যে অনেক দূর এগিয়েছি। যদি আগামী নির্বাচনে জয়ী হয়ে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পাই তাহলে দেশকে আধুনিক ও উন্নত দেশ গড়তে যেসব কাজ করা প্রয়োজন আমরা সবই করবো।

সেগুলো হলো- নিরপেক্ষ শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন, এক পরিবারে একবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে না পারা, সংবিধানের পরিপূর্ণ সংস্কার, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, জাতীয় জননিরাপত্তা নিশ্চিত করা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও গণমাধ্যম নীতি বাস্তবায়ন, গ্রাম ভিত্তিক উন্নয়ন, কর্মের চাহিদা নির্ভর কর্মমুখী শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করা, চাকরির নিয়োগে কোটা পদ্ধতি বিলুপ্ত, চাকরির বয়সসীমা ৩৫ বছরে নির্ধারণ করা, শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি নিশ্চিত করা, সবার জন্য ফ্রি স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করা, দেশে-বিদেশে অধিকতর কর্মসংস্থান করা, নারী ও পুরুষের বৈষম্য কমানো, শিল্প বিপ্লবের পরিবেশ তৈরি করা, ঘুষ ও দুর্নীতি চিরতরে নির্মূল করা ইত্যাদি। আব্দুর রহিম আরো বলেন, পূর্বের ৮ দফা দাবি ছাড়াও আজ আমরা আরও ১৩ দফা দাবি জানিয়েছি। আমাদের সর্বমোট ২১ দফা বান্তবায়নের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি।

আমাদের ৮ দফা দাবিগুলো হলো- দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী ও নির্বাচনের পক্ষে স্বৈরাচারী সরকারের দোসরদের গ্রেফতার করে বিচার করা, হাসিনার জুলুমের শিকার ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের থানা ভিত্তিক তালিকা প্রস্তুত করে টপ-টেন ঘটনাকে ৪৫ দিনের মধ্যে প্রতিকার প্রদানের ব্যবস্থা করা, হাসিনা কর্তৃক জুলুম নির্যাতনের বিষয়গুলো জাতীয়ভাবে প্রচার করার মাধ্যমে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে তাদের ইমেজ বিল্ডআপ করা, স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নির্বাচনের পূর্বে এক শতাংশ ভোটারদের সমর্থন নেয়ার যে বিধান রয়েছে তা বাতিল করা, ভাষানটেক পুনর্বাসন প্রকল্প ও কলমিলতা বাজারের বিষয়ে জরুরি ভিত্তিতে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের দীর্ঘদিনের ঝুলিয়ে রাখা দাবির বিষয়টির উপর পদক্ষেপ নিয়ে সমাধান করা, সরকারি টাকা ছাড়াই সাধারণ বস্তিবাসী ও নিম্নবিত্ত মানুষের জীবনমান উন্নয়নের জন্য এনএসপিডিএল (Nspdl) এর গৃহীত পুনর্বাসন প্রকল্প সহ কমপক্ষে ১০০টি প্রকল্প জরুরি ভিত্তিতে চালু করার উদ্যোগ গ্রহণ করা, চলমান এই আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছে বা হইতেছেন তাদের তালিকা করে তাদেরকে জাতীয় বীরের মর্যাদা প্রদান করতে হবে এবং প্রতিটি পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিয়ে আহতদের সুচিকিৎসা ও পুনর্বাসন করা, ঘুষখোর, দুর্নীতিবাজ, অর্থ পাচারকারী, লুটপাটকারী ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ ও আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা।

এছাড়া অন্যান্য দাবিগুলো হলো- জনতার আকাঙক্ষা ও ২৪’র চেতনাকে বাস্তবায়ন করার জন্য যাবতীয় সংস্কার করা, বিপ্লবী সরকারের ন্যায় রাষ্ট্র পরিচালনা, সংস্কার শেষে সরকারকে মাঠ পর্যায়ে তা বাস্তবায়নের জন্য এক বছর সময় দেয়া অতঃপর নির্বাচন, বিদেশী কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে ব্যাপক উদ্যোগ গ্রহণ ও বিনিয়োগ করা, দেশের অভ্যন্তরীণ জনগোষ্ঠীকে কর্মমুখী করা, কর ব্যবস্থাপনায় জনবান্ধব প্রক্রিয়া সহ ব্যক্তি করের করমুক্ত সিলিং ১০ লক্ষ টাকায় উত্তীর্ণ করা , দুর্নীতিবাজ ও অদক্ষ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বরখাস্ত করে তদস্থলে যোগ্য, সৎ ও কর্মঠ ব্যক্তিদের নিয়োগ প্রধান। শিক্ষার্থীদের নৈতিক শিক্ষা ও মানবিক গুণাবলী সহ কারিগরি শিক্ষায় সম্পন্ন করে গড়ে তোলা। এ সকল দাবি সমূহ সরকারকে অবশ্যই আগামী ১৫ দিনের মধ্যে দৃশ্যমান বাস্তবায়ন করে দেখাতে হবে, অন্যথায় আমরা সরকারের ভূমি মন্ত্রণালয় ও ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনসহ অন্যান্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে ঘেরাও কর্মসূচি পালন করব। প্রয়োজনে আমরা আরো কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো। সংবাদ সম্মেলনে এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন- এডভোকেট নূর তাজ ঐশী, মোঃ রফিকুল ইসলাম, অধ্যাপক ডক্টর সৈয়দ মোঃ এড. হুমায়ুন কবির ভূঁইয়া, ড. প্রকৌশলী লুৎফর রহমান, নুরুল হুদা চৌধুরী মিলু, ডক্টর শফিকুল ইসলাম কানু, আবুল কাশেম মজুমদার, আবু আহাদ আল মামুন, ইয়াছির আকতার, মির্জা আজম, এম এ ইউসুফ, মিসেস মরিয়ম বিবি, ফজলুল হক প্রমুখ।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
Developer Ruhul Amin