বুধবার, ০২ জুলাই ২০২৫, ০১:৪২ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
রূপগঞ্জে সাংবাদিক রাশেদুল ইসলামের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন আবু সাঈদের কবর জিয়ারতের মধ্য দিয়ে এনসিপির জুলাই পদযাত্রা শুরু স্বৈরাচার পতনে যাতে ১৬ বছর অপেক্ষা করতে না হয়, সেই কাজ করছি: প্রধান উপদেষ্টা ফুলপুরে মাদকাসক্ত ছেলেকে ভ্রাম্যমান আদালতের হাতে তুলে দিলেন মা! ৬ মাসের কারাদণ্ড সাবেক সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল গ্রেপ্তার রূপগঞ্জে ভূলতা  সিলেট মহাসড়ক যানজট মুক্ত   নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা  হাইওয়ে পুলিশ দুদক সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন ওএসডি, ৭ কর্মকর্তাকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত সচিবালয়ের ক্যান্টিনের নিয়ন্ত্রণ নিতে সংঘর্ষ বাংলা বললেই জোর করে বাংলাদেশে পাঠানো হচ্ছে : ক্ষোভ মমতার রূপগঞ্জে হাইওয়ে পুলিশ ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবৈধ দখলমুক্ত অভিযান
নোটিশঃ
২৪ ঘন্টায় লাইভ খবর পেতে চোখ রাখুন প্রতিদিনের বাংলাদেশ ওয়েবসাইটে

ফরিদপুরের মধুখালীতে বাবা ও ভাইয়ের উপর যৌন নির্যাতনের অভিযোগ

ফরিদপুর প্রতিনিধি  / ৯৮ Time View
Update : সোমবার, ২৭ মার্চ, ২০২৩, ২:৫৭ অপরাহ্ন

ফরিদপুরের  মধুখালীতে দ্বিতীয় শ্রেণির এক শিশু শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের নাটক সাজিয়ে ওই শিশুর বাবা ও ভাইকে তুলে নিয়ে নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। গত ১৭ মার্চ মধুখালী উপজেলার জাহাপুর ইউনিয়নের আড়ুয়াকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর ক্লাসরুমে এ ঘটনা ঘটে। নির্যাতনের ঘটনার নয়দিন পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। নির্যাতনের ঘটনায় গত ২০ মার্চ নির্যাতনের স্বীকার ইয়ামিন মৃধা বাদি হয়ে কুতুবউদ্দিন, ফয়সাল ও জহিরুলের নামসহ অজ্ঞাত ৮-১০জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন। মামলার পরপরই দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠালে তারা বর্তমানে জামিন নিয়ে বাইরে রয়েছেন বলে জানা যায়। এ ঘটনার মূল হোতা মো. কুতুবউদ্দিন (২৫) পলাতক থাকলেও আজ রবিবার ফয়সাল নামে অপর আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিষয়টি মধুখালী থানার ওসি মো. শহিদুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, মধুখালী উপজেলার কামারখালী ইউনিয়নের সালামতপুর গ্রামের বাসিন্দা ইয়ামিন মৃধা (৪০), ছেলে রাজন মৃধা (১৩) ও  ইভা (৯) নামে মেয়েকে নিয়ে মাঝকান্দি এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন। মেয়েটি উপজেলার জাহাপুর ইউনিয়নের আড়ুয়াকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়ালেখা করে। মেয়েটির মা নেই বাবা সপ্তাহে ৫দিন কাজের জন্য বাসার বাহিরে থাকেন। শিক্ষার্থীর সৎ ভাই রাজন মৃধা বোনকে যৌন নির্যাতন করে আসছে বাবা-ছেলে মিলে। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে গত ১৭ মার্চ স্থানীয়রা সুকৌশলে শিশুটির বাবা ও সৎ ভাইকে খবর দিয়ে আড়ুয়াকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষে আটকে কয়েকজন যুবক ও রুপা নামে এক তরুণী মিলে ইয়ামিন মৃধা ও তার ছেলে রাজন মৃধাকে টর্সার সেলের ন্যায় বেধড়ক ভাবে পিটিয়ে নির্যাতন চালিয়ে পুলিশে দেয়। নির্যাতনের কয়েকদিন পর গতকাল শনিবার (২৫ মার্চ) একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হলে বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ ফেসবুকে প্রতিবাদের ঝড় তোলে। নির্যাতনকারীদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবি তোলা হয়। কিশোর রাজন মৃধা ও তার বাবা পৃথক দুইটি জুট মিলে শ্রমিকের কাজ করেন এবং রাজনের মা প্রবাসে থাকেন বলে আরো জানা যায়।
নির্যাতনের স্বীকার ইয়ামিন মৃধা জানান, আমার মেয়ে ইভাকে আড়ুয়াকান্দি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করার পর থেকে ওই স্কুলের সহকারী শিক্ষক লিপি আক্তার নিঃসন্তান হওয়ায় ইভাকে বিভিন্ন প্রকার প্রলোভন দেখিয়ে তার বাড়িতে পালিত সন্তান হিসেবে নেওয়ার পায়তারা চালায়। মাস দুই আগে ইভাকে ওই শিক্ষক আমাকে না বলে তার বাড়িতে নিয়ে প্রায় সপ্তাহ খানেক রাখে। তারপর আমাকে নির্যাতনের ঘটনার তিনদিন আগে ইভাকে পুনরায় আবার নিয়ে তার বাড়িতে নিয়ে যায়। আমরা খোজাখুজি করে না পেয়ে জানতে পারি ওই শিক্ষকের ফরিদপুরের বাসায় ইভা আছে। পরে শিক্ষক লিপি আক্তারকে ফোন দিলে তিনি শুক্রবার (১৭ মার্চ) আমাকে ও ছেলেকে স্কুলে যেতে বলে। প্রথমে আমি ছেলেকে স্কুলে পাঠালে তাকে আটকিয়ে রেখে আমাকে যেতে বলে। আমার যাওয়ার পরেই কুতুব উদ্দিনসহ আসামিরা মেয়েকে স্ট্যাম্পে লিখে দিতে বলে। তাদের কথায় রাজি না হওয়ায় আমাদের বাবা-ছেলের উপর তারা নির্যাতন চালায়। তবে সহকারী শিক্ষক লিপি আক্তার তার বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন।
 রবিবার সকালে আড়ুয়াকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি দশোরাত চন্দ্র দাস জানান, ওইদিন ছিলো জাতীয় শিশু দিবস ও বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন। এতো বড় একটা ঘটনা তা প্রধান শিক্ষক এ পর্যন্ত আমাকে বলেননি। লোক মারফত জানতে পেরেছি। তবে বাবা-ছেলেকে স্কুলের মধ্যে মারধরের একটি ভিডিও আমি শনিবার দেখেছি। এ রকম খারাপ কাজ যারা করেছে তাদের কঠিন শাস্তির আওতায় আনা হোক।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. কবিরুজ্জামান বলেন, মেয়েটি এই স্কুলে দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়তো। ঘটনাটি জানাজানি হলে প্রথমদিকে লিখিত দিয়ে মেয়েটিকে তার বাবা একবার নিয়ে যায়। তবে বাবা-ছেলেকে পিটানোর ঘটনা জানার পর আমি দ্রুত পুলিশকে খবর দিলে তাদের নিয়ে যায়। আগে থেকে জানতাম না যে, আমার স্কুল কক্ষে এ রকম ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে।
এ ব্যাপারে মধুখালী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, খুব শিগগিরই এ ব্যাপারে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য বা শিক্ষকরা জড়িত আছে কি-না সেটাও খতিয়ে দেখা হবে। এছাড়া এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বিষয়টি নিয়ে জেলা পুলিশ সুপারের সাথে কথা বলেছি।
 রবিবার দুপুরে মধুখালী থানার ওসি মো. শহিদুল ইসলাম জানান, গত শুক্রবার (১৭ মার্চ) দ্বিতীয় শ্রেণির এক শিশুকে নির্যাতনের অভিযোগ তুলে স্থানীয় একটি স্কুলের শ্রেণিকক্ষে এক কিশোর ও তার বাবাকে আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগে গত ২০ মার্চ থানায় একটি মামলা হয়েছে। মামলার পরপরই নির্যাতনের  শনিবার পর্যন্ত তিনজন আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার সাথে বাকি জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
Developer Ruhul Amin