বুধবার, ০৬ অগাস্ট ২০২৫, ০৯:৩৮ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়নে রূপগঞ্জে যুবদলের লিফলেট বিতরণ রূপগঞ্জে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে সাংবাদিক লাঞ্ছিত ও হুমকির শিকার ভালোবাসার কুঁড়ে ঘর স্বেচ্ছায় রক্তদান সোসাইটির আত্মপ্রকাশ তারেক রহমানের বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য, প্রতিবাদে জেলা যুবদলের বিক্ষোভ রূপগঞ্জে কৃতি শিক্ষার্থীদের সবংর্ধনা ও কলেজের উদ্বোধন অপরাধমুক্ত তরুণ সমাজ গঠনে খেলাধুলার গুরুত্ব অপরিসীম — মিজানুর রহমান সেলিম রূপগঞ্জে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মসজিদের নামে সাইনবোর্ড স্থাপন, উত্তেজনা জুলাই বিপ্লবের শহীদের পরিবার ও আহতদের পুনর্বাসন করতে হবে- বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী মনিরুজ্জামান কাঞ্চন পৌরসভাকে মাদকমুক্ত গড়ার স্বপ্ন  দেখেন সানাউল্লা মান্নান সানি   তারেক রহমানের নির্দেশে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করলেন ছাত্রদল নেতারা
নোটিশঃ
২৪ ঘন্টায় লাইভ খবর পেতে চোখ রাখুন প্রতিদিনের বাংলাদেশ ওয়েবসাইটে

নারী এনবিআর কর্মকর্তাকে অপহরণের কারণ জানালেন গাড়িচালক

Reporter Name / ৩৮ Time View
Update : শনিবার, ২৬ আগস্ট, ২০২৩, ৯:২৫ পূর্বাহ্ন

অনলাইন  ডেস্ক:

রাজধানীতে অপহরণের হাত থেকে প্রাণে বাঁচলেন এক নারী যুগ্ম কমিশনার। নির্যাতনের শিকার মাসুমা খাতুন এনবিআরের যুগ্ম কমিশনারের (ট্যাক্স) কর অঞ্চল-২-এ কর্মরত। এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। ব্যক্তিগত শৃঙ্খলাজনিত কারণে ভুক্তভোগী তার গাড়ি চালককে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়ায় তাকে অপহরণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে এলিট ফোর্স।

র‌্যাব কর্মকর্তা বলেন, গ্রেফতার মাসুদ ভুক্তভোগীর গাড়ির ড্রাইভার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। গত ১ আগস্ট ব্যক্তিগত শৃঙ্খলাজনিত কারণে ভুক্তভোগী তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেন। ফলে গ্রেফতার মাসুদের মধ্যে ভুক্তভোগীর প্রতি ব্যক্তিগত ক্ষোভ ও আক্রোশের সৃষ্টি হয়। মাসুদ জানান, তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়ায় ভুক্তভোগীর প্রথম স্বামী হারুন অর রশিদ তার সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং ভুক্তভোগীকে উচিত শিক্ষা দিতে রাজধানীর হাতিরঝিল এলাকার একটি বাসায় নিয়ে যাওয়ার জন্য মাসুদকে বিপুল পরিমাণ অর্থ ও উন্নত জীবনের প্রলোভন দেখান।

মাসুদের বরাত দিয়ে র‌্যাব কর্মকর্তা জানান, পরিকল্পনা অনুযায়ী হারুন অর রশিদ তাকে অগ্রিম ৭০ হাজার টাকা দেন এবং কাজ সম্পাদনের পর তাকে আর ড্রাইভিং করতে হবে না এবং উন্নত জীবনযাপন করার সব ব্যবস্থা করে দেবেন বলে আশ্বাস দেন। গত ১৫ আগস্ট রাজধানীর সবুজবাগ এলাকায় গ্রেফতার মাসুদ তার সহযোগী হাফিজ, পনু, রাজু, সাব্বির, সাইফুল ও শান্তকে পরিকল্পনার কথা জানান এবং সবার মধ্যে ওই টাকা বণ্টন করে দেন। তারা রাজধানীর বেইলি রোড এলাকা থেকে ভুক্তভোগীকে অপহরণের সিদ্ধান্ত নেন। ভুক্তভোগীর বর্তমান গাড়ি চালকের সঙ্গে গ্রেফতার হাফিজের সুসম্পর্ক থাকায় ভুক্তভোগীর অবস্থান গাড়ি চালক থেকে জেনে মাসুদকে জানান। পরিকল্পনা অনুযায়ী, গত ১৭ আগস্ট রাত আটটায় তারা রাজধানীর বেইলি রোড এলাকায় অবস্থান নেন। ভুক্তভোগী রাত সোয়া আটটায় রাজধানীর মগবাজার থেকে নিজ গাড়িযোগে বেইলি রোড এলাকায় পৌঁছালে তারা পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী একটি মোটরসাইকেল ও একটি রিকশা দিয়ে ভুক্তভোগীর গাড়ির গতিরোধ করেন।

এ সময় ভুক্তভোগীর ড্রাইভার মোটরসাইকেল ও রিকশা সরানোর জন্য নামলে তাকে মারধর করেন এবং মাসুদ ড্রাইভিং সিটে বসে গাড়ির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেন। এসময় গ্রেফতার পনুসহ অন্যান্য সহযোগীরা গাড়িতে উঠে বসে ভুক্তভোগীকে জোরপূর্বক অপহরণ করে হাতিরঝিলের দিকে নিয়ে যান। অপহরণের বিষয়টি ভুক্তভোগীর প্রথম স্বামীকে জানান। তখন ভুক্তভোগীর প্রথম স্বামী তাদের হাতিরঝিলে একটি বাসার ঠিকানা বলে দেন এবং তাকে সেখানে নিয়ে যেতে বলেন। কিন্তু সেখানে গিয়ে তারা ওই বাসার মেইন গেইট বন্ধ পাওয়ায় ভুক্তভোগীকে নিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় গাড়িতে করে ঘুরে সময়ক্ষেপণ করতে থাকেন।

পরে আনুমানিক রাত ১২টায় কাঁচপুর এলাকায় গ্রেফতার মাসুদের পরিচিত একটি গ্যারেজে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন করে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে ভুক্তভোগীর কাছে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন এবং তার কাছে থাকা নগদ দেড় লাখ টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেন বলে ভুক্তভোগী অভিযোগ করেন। পরে তাকে নিয়ে অপহরণকারীরা ১৮ আগস্ট সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর মাদারটেক এলাকায় যান এবং জুমার নামাজ পর্যন্ত অবস্থান করেন।

এ সময় গ্রেফতার মাসুদ ভুক্তভোগীর প্রথম স্বামীর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি তাদের জুমার নামাজের পর সেখানে নিয়ে যেতে বলেন। পরে দুপুরে খাবারের সময় হলে মাসুদ, রাজু ও সাব্বির খাবার আনতে যান এবং পনু, সাইফুল ও শান্ত গাড়ি বাইরে পাহারায় থাকেন। এসময় সুযোগ বুঝে ভুক্তভোগী বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার শুরু করলে স্থানীয় লোকজন ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করে সাইফুল, সাব্বির ও রাজুকে আটক করে এবং গ্রেফতার মাসুদ, পনু ও শান্ত কৌশলে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান। পরে পুলিশ এসে ভুক্তভোগীকে হেফাজতে নেয় এবং সাইফুল, সাব্বির ও রাজুকে গ্রেফতার করে তাদের কাছ থেকে ভুক্তভোগীর ল্যাপটপ ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করে।

গ্রেফতার মাসুদ গত ২৫ বছর ধরে গাড়ি চালান। তিনি ইতঃপূর্বে বাস, ট্রাকসহ বিভিন্ন ধরনের ভারী যানবাহন চালাতেন। বাস চালানোর সময় একটি সড়ক দুর্ঘটনায় কয়েকজনের নিহতের ঘটনায় তার নামে মামলা হলে তার ভারী যান চালানোর লাইসেন্সটি বাতিল হয়। এছাড়া তিনি গাড়ি চুরিসহ এলাকায় বিভিন্ন ধরনের অপকর্মের সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে জানা যায়। ওই ঘটনার পর তিনি রাজধানীর বাবুবাজার এলাকায় তার এক বন্ধুর বাসায় এবং গাজীপুর শ্রীপুর এলাকায় তার এক আত্মীয়ের বাসায় আত্মগোপনে ছিলেন। সেখান থেকেই র‌্যাব তাকে গ্রেফতার করে।

গ্রেফতার পনু পেশায় একজন সিএনজি চালক। একই এলাকায় বসবাস করার কারণে মাসুদের সঙ্গে তার সুসম্পর্ক ছিল। ওই অপহরণের ঘটনায় মাসুদ তাকে সাড়ে ছয় হাজার টাকা অগ্রিম দেন। গ্রেফতার হাফিজ দূরপাল্লার বাস চালাতেন। ২০২২ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে সিলেট যাওয়ার পথে সড়ক দুর্ঘটনার ফলে তার চাকরি চলে যায়।  একই পেশা এবং একই এলাকায় বসবাসের কারণে মাসুদের সাথে তার সুসম্পর্ক ছিল। অপহরণের ঘটনায় মাসুদ তাকে পাঁচ হাজার টাকা অগ্রিম দেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুরে মাসুমার সাবেক স্বামী হারুনুর রশিদের বড় মগবাজারের বাসায় তার ছোট ছেলে আরিয়ানের সঙ্গে কথা হয়। মতিঝিল আইডিয়ালের দশম শ্রেণির ছাত্র আরিয়ান জানায়, মাকে দেখে থানায় কান্নায় ভেঙে পড়ি। তার চেহারার দিকে তাকানো যাচ্ছিল না। সে বলে, আমি জন্মের পর থেকে দেখে আসছি বাবা-মায়ের মধ্যে বিরোধ চলছে। প্রথমদিকে আমরা সবাই একই ফ্ল্যাটে থাকলেও পরে পাশাপাশি দুই ফ্ল্যাটে মা-বাবা আলাদা থাকতেন। আমি বাবার সঙ্গে এবং দুই বোন মায়ের সঙ্গে থাকতেন। ২২০০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট দুটি বাবা কিনেছেন। একটি বড় বোনের নামে কেনা হয়েছে। বোনের বিয়ের পর একই ভবনে আরেকটি ফ্ল্যাট নেওয়া হয়। কিন্তু বোন ওই ফ্ল্যাটে থাকতেন না। আমাদের সবার অগোচরে সেখানে মা তার দ্বিতীয় স্বামীকে নিয়ে সময় কাটাতেন। তারা যে বিয়ে করেছেন-সেটি আগে জানতাম না। একদিন বাবা দুজনকে একসঙ্গে বেডরুমে দেখার পর, বাসায় অনেক ভাঙচুর করেন। ওইদিন দ্বিতীয় বিয়ের কথা স্বীকার করেন মা।

ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারের উপকমিশনার ফারুক হোসেন বলেন, মাসুদ ও তার সহযোগীরা পেশাদার অপহরণকারী চক্রের সদস্য। মাসুদের পরিকল্পনাতেই এ ঘটনা ঘটেছে। তাকে গ্রেফতার করতে পারলেই সব জানা যাবে। এছাড়া এ অপহরণের সঙ্গে অন্য কোনো বিষয় আছে কিনা সেটিও জানা যাবে। রমনা থানার ওসি আবুল হাসান বলেন, এ ঘটনার তদন্ত চলছে। তাই এ নিয়ে এ মুহূর্তে কোনো মন্তব্য করব না।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
Developer Ruhul Amin