অনলাইন ডেস্ক:
লুসাইলের আর্জেন্টিনা-ফ্রান্স ফাইনাল যেন থ্রিলার মুভিকেও হার মানিয়েছে। প্রতি মুহূর্তেই ম্যাচের বাঁক বদলেছে প্রতি মিনিটে। শ্বাসরুদ্ধকর টাইব্রেকারে গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্তিনেজের নৈপুণ্যে শিরোপা জিতলো আর্জেন্টিনা। ৩৬ বছর পর শিরোপাখরা ঘুচলো আকাশি-নীলদের। রোববার (১৮ ডিসেম্বর) ফ্রান্সের বিপক্ষে বিশ্বকাপের ফাইনালে জয়ের মাধ্যমে ১৯৮৬ সালের পর প্রথমবারের মতো বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন খেতাব পেলো লাতিন আমেরিকার এই দেশটি।
এরপরই হাজার হাজার আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েনস আইরেসের রাস্তায় নেমে আসেন। তাদের উল্লাস-উচ্ছ্বাস ছিল বাঁধভাঙা। সোমবার (১৯ ডিসেম্বর) এই তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এবং সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু।
রয়টার্স জানায়, প্রায় ৮৮ হাজার দর্শক-ভক্তদের সামনে কাতারে খেলা উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচে তারকা খেলোয়াড় লিওনেল মেসির নেতৃত্বে আর্জেন্টিনা ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সকে পরাজিত করে তৃতীয় বিশ্বকাপ ঘরে তোলার পর রাজধানী বুয়েনস আইরেসের রাস্তায় নেমে আসেন হাজার হাজার আর্জেন্টাইন নাগরিক। এ সময় তারা উল্লাসে মেতে ওঠেন।
বিশ্বকাপ জয়ের পর পরিবারের সাথে জয় উদযাপন করতে বুয়েনস আইরেসের বাড়ির সামনের রাস্তায় বেরিয়ে আসে ১৩ বছর বয়সি ফুটবল ভক্ত সান্তিয়াগো। বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় কিশোর এই ফুটবল ভক্তের অনুভূতি, ‘আমি এটা বিশ্বাস করতে পারছি না! এটা কঠিন ছিল, কিন্তু আমরা এটা পেরেছি, মেসিকে ধন্যবাদ।’
রয়টার্স বলছে, পতাকা, টুপি এবং দেশের আইকনিক নীল-সাদা জার্সি নিয়ে আর্জেন্টাইনরা ফাইনালে জয়ের কয়েক মিনিটের মধ্যে বুয়েনস আইরেসের কেন্দ্রস্থল এবং অন্যান্য আইকনিক স্পট দখল করে নেয়। একই সময়ে দেশজুড়ে আরও অনেক স্থানে আনন্দ, উল্লাস ও উদযাপন ছড়িয়ে পড়ে।
বুয়েনস আইরেসের শহরতলির ৪৬ বছর বয়সি ডিয়েগো অ্যাবুর্গেলি বলছেন, ‘এটি একটি অবিশ্বাস্য খেলা ছিল, মাঝে মাঝে যন্ত্রণাদায়ক। এই দলটি গত কয়েক দশকের মধ্যে প্রথমবারের মতো মানুষকে তাদের প্রেমে পড়তে বাধ্য করেছে।’
২০১৪ সালে জার্মানির বিপক্ষে টুর্নামেন্টের ফাইনালে হেরে যাওয়া লাতিন আমেরিকার এই দলটি ১৯৮৬ সাল থেকে গতকালের আগপর্যন্ত বিশ্বকাপ জিততে পারেনি। তবে দলের উত্থান আর্জেন্টিনাকে ব্যাপক উৎসাহিত ও উল্লসিত করেছে, যদিও এই দেশটি উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি এবং অর্থনৈতিক সংকটে জর্জরিত। যা দেশটির প্রায় ৪০ শতাংশ জনসংখ্যাকে দারিদ্র্যের দিকে ঠেলে দিয়েছে। রয়টার্স বলছে, বিশ্বকাপ জয় আর্জেন্টাইনদের মধ্যে কিংবদন্তি হিসেবে লিওনেল মেসির মর্যাদা নিশ্চিত করেছে। রোববারের এই ম্যাচটি আর্জেন্টিনার হয়ে বিশ্বকাপে তার শেষ উপস্থিতি হবে বলে মনে করা হচ্ছে।