কাওসার হামিদ, তালতলী(বরগুনা)প্রতিনিধি
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বেত্রাঘাত বা অন্য কোন ভাবে মারধর নিষিদ্ধ করেছে সরকার। কিন্তু সেখানে নয়াভাইজোড়া বিএনএ মাধ্যমিক বিদ্যালয় কক্ষেই রাতে কোচিং পড়াশোনার সময় ছাত্রকে মারধর করে রক্তাক্ত যখম করা হয়। বরগুনার তালতলীতে পড়া নিয়ে সহপাঠীদের সাথে কথার কাটাকাটি নিয়ে ৭ম শ্রেণীর রাব্বি নামের এক শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে হাসপাতালে পাঠিয়েছে শিক্ষক । তার শরীরের বিভিন্ন অংশে লাঠি দিয়ে উপর্যুপরি পিটিয়ে থেঁতলে দেওয়া হয়।
সোমবার(২৮ নভেম্বর) সন্ধা ৭টার দিকে উপজেলার নয়া ভাইজোড়া বিএনএ মাধ্যমিক বিদ্যালয় কক্ষে কোচিং পড়ানোর সময় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা বলেন, উপজেলার নয়া ভাইজোড়া বিএনএ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো.তসলিম স্কুল কক্ষে রাতে কোচিং পরিচালনা করে আসছেন। শিক্ষার্থীদের ফেল করিয়ে দেওয়া ও পরীক্ষার খাতায় লিখতে না দেওয়াসহ বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে শিক্ষার্থীদের তার কাছে কোচিং করতে বাধ্য করেন। স্কুল কক্ষে কোচিং পরিচালনার সময় সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র রাব্বি ও তার সহপাঠীদের সাথে পড়া নিয়ে কথার কাটাকাটি চলে । পরে শিক্ষক রাব্বিকে অনন্য শিক্ষার্থীদের সামনেই বেধড়ক পিটিছেন। এ সময় হাত ও পাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে লাঠি দিয়ে উপর্যুপরি পিটিয়ে থেঁতলে দেয়।
আহত শিক্ষার্থী রাব্বি বলেন শিক্ষক মো.তসলিম ফেল করিয়ে দেওয়া ও পরীক্ষার খাতায় লিখতে না দেওয়াসহ বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে আমাদের তার কাছে কোচিং করতে বাধ্য করেন। রাব্বি আরও বলেন, গতকাল সন্ধ্যায় আমার সহপাঠীর সাথে পড়ালেখা নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। কোন কিছু না বলে হঠাৎ ওই স্যার আমাকে মারধর করেন। আমি কান্নাকাটি করলেও কেউ বাচাঁতে আসেনি। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে আমাকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন।
ঐ স্কুলের প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম মারধরে বিষয়ে স্বীকার করে করে বলেন, মারধরের ঘটনা খুবই দুঃখজনক। ঐ শিক্ষক সহ কমিটির সবাইকে নিয়ে বসা হয়েছে। শিক্ষক তার ভুল স্বীকার করেছে ও এমন কাজ আর কখনো করবে না। এই মর্মে বিষয়টি অভিভাবকদের নিয়ে সমাধান করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন রাতে কোচিং পরিচালনা করা হয় না স্কুল কক্ষে। তবে অভিভাবকদের অনুরোধে স্কুলে ছাত্রছাত্রীদের পড়ানো হয় রাতে।
এ বিষয়ে শিক্ষা অফিসার লুৎফুর কবির বলেন, মারধরের ঘটনা শুনেছি ও বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। এছাড়া ঐ স্কুলে রাতে কোন কোচিং পড়াশোনা করা হবে না। সেটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাজী সাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, এ বিষয়ে এখনো কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তালতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার এসএম সাদিক তানভীর বলেন, যেহেতু বিষয়টি ফৌজদারী অপরাধের ভিতরে পরে। এজন্য অভিভাবক থানায় বিষয়টি অবহিত করলে থানা থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যে স্কুলের ছাত্র সেই স্কুলের শিক্ষকরা পড়াতে পারবে না। সেটা রাতে হোক বা দিনই হোক। রাতে তো স্কুলে কোচিং নামে পড়ানো যাবে না । সে বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।