আজকে আপনাদের কাছে আমার আলোচনা হলো বান্দার কোন আমল আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয়, সেই সম্পর্কে মহান আল্লাহ তায়ালা যেন আমাকে তাওফিক দান করেন আল্লাহুম্মা আমিন। আল্লাহ তায়ালা তার বান্দাদের সঠিক পথ দেখানোর জন্য নাজিল করেছেন মহাগ্রন্থ আল-কোরআন। এ ছাড়াও প্রেরণ করেছেন অসংখ্য নবী-রাসুল। হজরত মুহাম্মাদ (সা.) তার উম্মতকে সব সমস্যার সমাধানের জন্যই আমল শিখিয়েছেন। আর মানুষের সৃষ্টি ইবাদতের জন্যই। গভীর রাতের ইবাদত আল্লাহ তায়ালার কাছে অনেক পছন্দের।
কোরআন-হাদিসের নির্দেশনা অনুযায়ী, নেক আমলের মাধ্যমে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি ও নৈকট্য অর্জন করা যায়। কিছু আমল আছে, যেগুলো আল্লাহর কাছে বেশি প্রিয়। এর একটি হলো গুরুত্বসহ সময়মতো নামাজ আদায় করা।
আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে প্রশ্ন করলাম, আল্লাহর কাছে সর্বাধিক প্রিয় আমল কোনটি? তিনি বলেন, ‘সঠিক সময়ে নামাজ আদায় করা।’ আমি জিজ্ঞেস করলাম, তারপর কোনটি? তিনি বলেন, ‘মা-বাবার প্রতি সদ্বব্যবহার করা।’ আমি এরপর জিজ্ঞেস করলাম, তারপর কোনটি? ‘তিনি বলেন আল্লাহর পথে জিহাদ করা।’ তিনি আমাকে এই কথাগুলো বলেন, আমি যদি আরও প্রশ্ন করতাম, তাহলে তিনি আরও অতিরিক্ত বিষয়ে বলতেন। (সহিহ মুসলিম: ১৫৫)
এ ছাড়া যেকোনো নেক আমল ধারাবাহিকতা বজায় রেখে করলেও তা আল্লাহর প্রিয় আমলে পরিণত হয়। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.)-কে জিজ্ঞেস করা হলো, আল্লাহর কাছে সর্বাধিক প্রিয় আমল কী? তিনি বলেন, ‘যে আমল নিয়মিত করা হয়। যদিও তা অল্প হয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘তোমরা সাধ্যের অতীত কাজ নিজের ওপর চাপিয়ে নিও না।’ (সহিহ বোখারি: ৬৪৬৫)
পবিত্র কোরআন মহান আল্লাহর প্রিয় কালাম। এই কালাম যারা পড়বে এবং তার ওপর আমল করবে, কেয়ামতের দিন তার জন্য আল্লাহর কালাম সুপারিশ করবে। হাদিসে মহানবি (সা.) কিছু কালামের কথা উল্লেখ করেছেন, যা মহান আল্লাহর কাছে বেশি প্রিয়।
সামুরাহ ইবনে জুনদাব (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহর কাছে বেশি পছন্দনীয় কালাম- সুবহানাল্লাহি ওয়াল হামদুলিল্লাহি ওয়া লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবর (অর্থ: আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা করছি, যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহর, এক আল্লাহ ছাড়া আর উপাস্য নেই এবং আল্লাহ সর্বশ্রেষ্ঠ) এগুলোর যেকোনো শব্দ দ্বারা তুমি শুরু করো, এতে তোমার কোনো ক্ষতি নেই (সহিহ মুসলিম: ৫৪৯৪)। মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা যেন উপরোক্ত আলোচনার প্রতি গুরুত্ব সহকারে আমল করার তাওফিক দান করেন আমীন।
লেখক: বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ লেখক ও কলামিস্ট হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী।